ঢাকা, শনিবার, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১২ জুলাই ২০২৫, ১৬ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

ফরিদপুরে নির্মাণ হচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৪০, জুলাই ১১, ২০২৫
ফরিদপুরে নির্মাণ হচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের স্থান

ফরিদপুর: ফরিদপুরে নির্মাণ করা হচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। গত বুধবার থেকে এ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে ফরিদপুরের গণপূর্ত বিভাগ।

ফরিদপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী  মো. সাইফুজ্জামান  জানান, সারাদেশে অভিন্ন বাজেটে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।
আগামী ৫ আগস্টের আগে এ নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। এ কাজের কত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা তার জানা নেই দাবি করে ফরিদপুর গণপূর্ত বিভাগের  নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘ডাইরেক্ট প্রক্রিউমেন্ট মেথড’ এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) সরেজমিনে শহরের হাসিবুল হাসান লাবলু সড়কের উত্তর পাশে নির্মিত আওয়ামী লীগে কার্যালয়ের যে কাঠামোটুকু অবশিষ্ট ছিল তা বড় আকারের হাতুড়ি দিয়ে ভাঙা হচ্ছে। এ কাজে নিয়োজিত রয়েছেন সাতজন নির্মাণ শ্রমিক। কাজ তদারকি করছে ঠিকাদার সোহান আল মামুন। তিনি জানান, গণপূর্তের এ কাজটি তারা পেয়েছে। গত বুধবার থেকে তারা এ কাজে হাত দিয়েছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের ওই কার্যালয়টি যেখানে ছিল সেই জায়গাটির মালিকানা জেলা প্রশাসন। ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে শেখ রাসেল ফাউন্ডেশনের নামে ২৬ শতাংশ জমি একসনা বন্দোবস্তের ভিত্তিতে ইজারা নেন শামীম হক। পরে ওই জায়গাটি শেখ রাসেল স্কোয়ার নামে পরিচিতি পায়। শামীম হক পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি  নির্বাচিত হন। এর পরে ওই জায়গায় শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণ করা হয়। এ কার্যালয়টি ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের দুই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ ও আব্দুর রহমান।

জুলাই আন্দোলনে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২৪ সালে জুলাই আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে ৪ আগস্ট বিক্ষুব্ধ জনতা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক ভাঙচুর করে। পরদিন ৫ আগস্ট দ্বিতীয় দফার হামলায় বিক্ষুব্ধ জনতার রুদ্ররোষে কার্যালয়টি ধংসস্তূপে পরিণত হয়। গত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সময় ওই জায়গাটি দুঃস্থ ব্যক্তিদের জন্য স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রির কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সোহরাব হোসেন বলেন,  দেশব্যাপী ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণ করা হচ্ছে সরকারি উদ্যোগে। গত সোমবার (৭ জুলাই) জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদপুর শহরে কোথায় জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা যায় সে ব্যাপারে সরেজমিনে কয়েকটি জায়গা পরিদর্শন করেন।

তিনি জানান, এর মধ্যে বর্তমানে যে জায়গায় জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে সে জায়গাসহ পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে একাত্তরের শহীদের নাম সম্বলিত বেদীর আশপাশে এবং রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের জায়গাটি যেটি পড়ে ন্যায্যমূল্যের সামগ্রী বিক্রির কাজে ব্যবহৃত হয়েছিল নিরাপত্তাসহ সব দিক বিচার বিশ্লেষণ করে সবচেয়েেউপযুক্ত হিসেবে নির্বাচন করা হয়।  

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সোহরাব হোসেন আরও বলেন, এ নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ হবে এবং আগামী ৫ আগস্ট সরকারি উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে নতুন করে নির্মিত জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের এ বেদিতেই পুস্পার্ঘ অর্পণ করা হবে।

জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।