ঢাকা, সোমবার, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২, ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৮ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

নারীর ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৪৮, জুলাই ১৩, ২০২৫
নারীর ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়

খুলনা: জলবায়ু ঝুঁকি প্রশমনে নারীর অবদান, প্রাপ্তি ও ক্ষমতায়নে করণীয় বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনা রোববার (১৩ জুলাই) সকালে পূর্বাঞ্চল ডায়ালগ সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দৈনিক পূর্বাঞ্চলের আয়োজনে এবং সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস) এর কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় ইভলব প্রকল্পের মাধ্যমে এ গোলটেবিল আলোচনাটি পূর্বাঞ্চল ডায়ালগ সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নারীর ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো.হুসাইন শওকত। দৈনিক পূর্বাঞ্চলের নির্বাহী সম্পাদক আহমদ আলী খানের সভাপতিত্বে ও বার্তা সম্পাদক অমিয় কান্ত পালের সঞ্চালনায় এ গোলটেবিল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুষার কান্তি রায়। প্রকল্পের উদ্দেশ্যে বর্ণনা করেন প্রজেক্ট কো অর্ডিনেটর দেবাশিষ কুমার ঘোষ।

বক্তৃতা করেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেষ্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজির অধ্যাপক ড. আব্দুস সোবহান মল্লিক, খুলনা বিভাগীয় সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক খান মোতাহার হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা মেট্রোপলিটন কৃষি অফিসার ফরহ দিবা শামস, খুলনা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার সাজিয়া আফরিন সিদ্দিকী, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান, খুলনা প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক এনামুল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন(বিএফইউজে)-এর সহকারী মহাসচিব ও দৈনিক আমার দেশের খুলনা ব্যুরো প্রধান এহতেশামুল হক শাওন, দৈনিক কালের কণ্ঠের খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন, বাংলানিউজের খুলনা ব্যুরো এডিটর মাহবুবুর রহমান মুন্না, এশিয়ান টিভির খুলনার বিভাগীয় প্রতিনিধি বাবুল আক্তার, নারী নেত্রী শামীমা সুলতানা শীলু, দাকোপের ১ নং পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান সাব্বির আহমেদ, সাবেক প্রধান শিক্ষক মইনুদ্দিন আহমেদ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উন্নয়নের নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, জেজেএস’র নির্বাহী পরিচালক এটিএম জাকির হোসেন, উপক‚লীয় এলাকারবাসিন্দা অর্পা মল্লিক, তানজিলা আক্তার কেয়া, সাবিনা ঝর্ণা, রবিউল ইসলাম, নুরুন্না

আলোচনায় জানানো হয়, একটি বৃহৎ প্রকল্প নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যা খুলনা ও বাগেরহাট জেলার ছয়টি উপজেলায় চলমান রয়েছে। যেখানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কিভাবে জীবন মানে উন্নয়রে চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে বাজেট প্রনয়নের আগে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ত করে তাদের মতামত নেয়া হয় এবং সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করা হয়। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কিভাবে জীবনযাত্রা মান উন্নতি করা যায় সে লক্ষ্যেও কাজ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও অতিমাত্রায় লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে জরায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন নারীরা। সেজন্য অল্প বয়সেই জরায়ু কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন এই এলাকার অনেক নারী। এছাড়া গত কয়েক দশকে উপকূলীয় এলাকায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির অভাব। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কলসি নিয়ে পানির খোঁজে দীর্ঘপথ হাঁটতে হয় নারীদের।

বক্তারা টকসই উন্নয়নে জেন্ডার সমতার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

সভায় বক্তারা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী নারীরা হলেও বাজেট বরাদ্দ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সীমিত। তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সালের এশিয়ান সুনামিতে নিহতদের ৭০% এবং ২০১৪ সালে সলোমন দ্বীপপুঞ্জের বন্যায় ৯৬% ছিল নারী ও শিশু। বাংলাদেশে প্রতি বছর উপকূলীয় দরিদ্র নারীরা পরিবারের ৩০% পর্যন্ত খরচ করছেন জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায়, যদিও জলবায়ু অভিযোজন খাতে বাজেট বরাদ্দ মাত্র জিডিপির ০.৭৪%।

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়নের মাত্র ৩% জেন্ডার সংবেদনশীল কাঠামোতে ব্যয় হয়। আর বাংলাদেশের বাজেটেও নারীর জন্য অভিযোজন প্রকল্পে আলাদা কোন লাইন আইটেম নেই।

 

 

এমআরএম

 

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।