বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় গতকাল থেকে শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস।
সেইসঙ্গে শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নিঝুম দ্বীপসহ হাতিয়ার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে অনেক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও সড়ক প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো পরিবার। বিশেষ করে নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানে বসবাসরত হরিণসহ বন্যপ্রাণীগুলোর জন্য এ অবস্থা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার দুপুরের পর থেকে জোয়ারের পানি দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। এতে ভেসে গেছে মাছের ঘের। অনেক এলাকায় পানি ঢুকে ঘরের ভেতর চলে আসে। কিছু পরিবার উঁচু স্থানে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। এদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় জননিরাপত্তার স্বার্থে হাতিয়া-চট্টগ্রাম ও হাতিয়া-নোয়াখালী নৌরুটে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানায়, জোয়ারের ফলে নিঝুম দ্বীপের সব পুকুর ও দিঘী ভেসে গেছে। প্রধান সড়কসহ সব সড়ক তলিয়ে গেছে। জোয়ারের পানি এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হচ্ছে। মানুষের বসতঘর, কৃষি জমি সব তলিয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবছর জোয়ারে ভেসে যায় ঘরবাড়ি, দোকান, গবাদিপশু, ফসলি জমি। ৭ লাখ মানুষের এই দ্বীপে নেই স্থায়ী বেড়িবাঁধ, নেই টেকসই বাঁধ, আছে শুধু নিঃসঙ্গতা আর অবহেলা। কেউ কেউ ত্রাণ নিয়ে আসে, কিন্তু আমরা আর ত্রাণ চাই না। আমরা চাই স্থায়ী সমাধান। আমাদের দাবি নদীভাঙন রোধে স্থায়ী ব্লকবাঁধ ও নিরাপদ জীবন।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন জানান, নদী ও সাগর উত্তাল থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে নৌ যোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে পুনরায় চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নিঝুম দ্বীপসহ অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আমরা খোঁজ খবর রাখছি। আরও কয়েকদিন এমন পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরএ