বাগেরহাটের রামপালে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই সভাপতি প্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। রোববার (৩ আগস্ট) বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদার ও সাজারুল ইসলাম সাজুর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এর জেরে একাধিকবার হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে শনিবার (২ আগস্ট) রাতে, যখন বেতবুনিয়া এলাকায় আব্দুল আলিমের অনুসারীরা প্রতিদ্বন্দ্বী সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকসহ ১১ জন নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালায়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বিকেলে সাজারুল ইসলাম সাজু ও শামীম হাসান পলকের সমর্থকরা পুলিশের অনুমতি নিয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। কিন্তু মানববন্ধনে অংশ নিতে জড়ো হলে আব্দুল আলিমের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে সভাপতি প্রার্থী সাজু ও আরও কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সাজুর অনুসারীরাও পাল্টা হামলা চালিয়ে সন্নাসী বাজারে আব্দুল আলিমের লোকজনকে মারধর করেন এবং তার বসতবাড়িসহ বাজারের প্রায় ২০টি দোকান ভাঙচুর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও দুই পক্ষের সংঘর্ষ থামানো যায়নি। একপক্ষ ছাদ থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছিল, অন্যপক্ষ বাজারে লাঠিশোটা ও রড নিয়ে দোকান ও ঘরবাড়ি ভাঙচুরে লিপ্ত হয়।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। দুই পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়েছে, ইটপাটকেল ছুড়েছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পর পরিস্থিতি সন্ধ্যার আগে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সাবেক যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের বিপুল জনপ্রিয়তা দেখে তাদের প্রতিদ্বন্দী সভাপতি প্রার্থী নিজেদের ভরাডুবি ভেবে নির্বাচন বানচাল করার জন্য আমাদের লোকদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সাবেক ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিঠু ও মজনুর নেতৃত্বে এ হামলা হয়।
মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, পুলিশ এসেছিল রামপাল থানা থেকে। পুলিশের সামনেই আব্দুল আলিমের লোকজন অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে।
সংঘর্ষে আহত সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু বলেন, আমরা চেয়েছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করতে, কিন্তু প্রতিদ্বন্দী সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন আমাদের হামলা করে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এই বিষয়ে জানতে বারবার ফোন করা হলেও সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদার ফোন রিসিভ করেননি।
এমজে