নীলফামারীর সৈয়দপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এখনও তৈরি হচ্ছে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হাকিমপুরি জর্দা। শহরের বাঁশবাড়ি এলাকায় এমরান নামে এক যুবক প্রকাশ্যে এই জর্দা উৎপাদন ও বাজারজাত করে চলেছেন, অথচ প্রশাসন রয়েছে নীরব।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়- ট্রেড লাইসেন্স, চেম্বার অব কমার্সের অনুমোদন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, বিএসটিআইয়ের ছাড়পত্র ও ভ্যাটের কাগজপত্র নিয়েই সব খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন করতে পারবে। এর একটি কাগজ না থাকলে কেউই কোনো প্রকার খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন করতে পারবে না।
এছাড়া একই মোড়কে কেউ যদি কোনো প্রকার খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন করে, তাহলে সেটা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ। কিন্তু হাকিমপুরি জর্দা উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা ও খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনের বৈধ কাগজপত্রের কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করেই সৈয়দপুরে হাকিমপুরি জর্দাটির উৎপাদন চলছে পুরোদমে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঁশবাড়ি এলাকার একটি বাড়িতে প্রতিদিনই চলছে জর্দা উৎপাদন, মোড়কজাত ও সরবরাহ কার্যক্রম। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিষয়টি জানলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এতে করে শুধু আদালতের আদেশই অমান্য হচ্ছে না, বরং জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ছে। কোন বৈধতায় ওই এলাকায় জর্দা উৎপাদন হচ্ছে, তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নেওয়া দরকার বলে দাবি স্হানীয়দের।
উৎপাদন বন্ধ থাকার নির্দেশ সত্বেও কোন বৈধতায় জর্দা উৎপাদন করছেন জানতে চাইলে এমরান বলেন, নিজের টাকা দিয়ে ব্যবসা করছি, কারো বাপের টাকায় নয়। জর্দা উৎপাদনের সব কাগজপত্র প্রশাসনের কাছে আছে। দেখার ইচ্ছে থাকলে সেখানে গিয়ে দেখতে পারেন।
পরে এ বিষয়ে কথা হয়, ম্যানেজার সাকিল আহমেদের সঙ্গে, তিনি বলেন, মালিক এমরান বলেছেন, তার নিজের একটা জর্দা ফ্যাক্টরি আছে। এর সঙ্গে হাকিমপুরি জর্দা উৎপাদনেরও অনুমতি নিয়েছেন। তিনি কোনো অবৈধ ব্যবসা করছেন না বলে জানান।
সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মীর হোসেন বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া ও একই মোড়কে কেউই খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন করতে পারবে না। আর যদি কেউ করে তা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ। এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানোর কথা বলেন তিনি।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ্এনও) নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন করা সম্পূর্ণ অবৈধ। একইসঙ্গে অন্যের মোড়কে খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনও আইন বিরোধী। যদি কেউ এই অপরাধ করে, তাহলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
আরএ