ঢাকা, রবিবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

ছাত্রীকে ওড়না ছাড়া দেখতে চান অধ্যক্ষ, কলেজ গেটে স্ক্রিনশট টানিয়ে মানববন্ধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৫৬, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫
ছাত্রীকে ওড়না ছাড়া দেখতে চান অধ্যক্ষ, কলেজ গেটে স্ক্রিনশট টানিয়ে মানববন্ধন মানববন্ধন

নওগাঁ সরকারি কলেজে অনিয়ম, দুর্নীতি, নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যক্ষের আপত্তিকর কথোপকথন এবং কলেজ প্রশাসন কর্তৃক হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে কলেজ চত্বরে কলেজের শিক্ষার্থী এবং জুলাই যোদ্ধা সংসদ, আহত ও শহীদ পরিবারের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি হয়।

জানা যায়, কলেজের ছাত্রীদের ফেসবুক মেসেঞ্জারে আপত্তিকর বার্তা পাঠানো এবং অবৈধ সম্পর্কে জড়াতে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুল হকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ছাত্রীদের ওড়না ছাড়াসহ বিভিন্ন সাজে দেখার আবদার করতে দেখা যায় তাকে। এতে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রোববার সকালে কলেজ গেটে ফেসবুক মেসেঞ্জারের আপত্তিকর বার্তার স্ক্রিনশট টানিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। যাচাই সাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, নওগাঁ জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মিজানুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আরমান হোসেন, শিক্ষার্থী সাদনান সাকিব, শহীদ ফাহমিনের মা কাজী লুলুন মাখমিম (শিল্পী), কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুনায়েদ হোসেন জুন, শিক্ষার্থীর অভিভাবক গোলাম রসুলসহ অন্যরা। মানববন্ধনে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুল হক ফেসবুক মেসেঞ্জারে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আপত্তিকর কথোপকথন করেছেন এবং ওড়না ছাড়া ছবি দেওয়ার জন্য বলেছেন। এসব বিষয় প্রকাশ করলে কৌশলে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এসব কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কোনো শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে কলেজ প্রশাসন দিয়ে তাদের মারধর করা হয়। পাশাপাশি কলেজে ভর্তিসহ বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়। বক্তারা শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং অধ্যক্ষের শাস্তির দাবি জানান।

ছাত্র প্রতিনিধি আরমান হোসেন বলেন, একজন অধ্যক্ষ হয়ে তিনি কীভাবে ছাত্রীদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে পারেন? কীভাবে ছাত্রীর কাছ থেকে ওড়না ছাড়া ছবি চাইতে পারেন? এমন অধ্যক্ষের কাছে ছাত্রীরা কীভাবে নিরাপদ থাকবে? কলেজে আবাসিক হল ও ক্যান্টিন নেই। বারবার বলার পরও তিনি কোনো উদ্যোগ নেননি। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে আসে না, সে বিষয়েও তিনি ভেবেছেন বলে মনে হয় না। শুধু অর্থ আত্মসাৎ করার পথ খোঁজেন।

জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, কলেজের উন্নয়নের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়। অথচ দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন নেই। অধ্যক্ষ কলেজে ‘মাস্তান বাহিনী’ পুষে রেখেছেন। প্রায়ই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-মারধরের ঘটনা ঘটে। দিনের পর দিন শিক্ষার্থীরা ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারে না।

এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুল হকের মোবাইলফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সারাদেশ এর সর্বশেষ