পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় আন্তঃবিদ্যালয় ফুটবল প্রতিযোগিতা ঘিরে দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষকসহ অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দেবীগঞ্জ নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দেবীগঞ্জ-সোনাহার আঞ্চলিক সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের মতে, বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া খেলায় ট্রাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জয়লাভ করে নৃপেন্দ্র নারায়ণ বিদ্যালয়। খেলা শেষে বিজয় মিছিলকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়, যা দ্রুত সংঘর্ষে রূপ নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের দাবি, সংঘর্ষে লাঠিসোটা, ইট-পাটকেল ব্যবহার করা হয়। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা একে অপরের প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে। নৃপেন্দ্র নারায়ণ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নামফলক ও জানালার কাঁচ ভাঙচুর করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় টেকনিক্যাল স্কুলের শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে এবং টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে প্রায় এক ঘণ্টা দেবীগঞ্জ-ডোমার মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে, ফলে দুই পাশে শতাধিক যানবাহন আটকে পড়ে।
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
এদিকে নৃপেন্দ্র নারায়ণ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিএম রুহুল আমিন বলেন, খেলা শেষে বিজয় মিছিল থেকে ফেরার সময় আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা হয়। এতে সাতজন আহত হয়। উত্তেজিত কিছু শিক্ষার্থী প্রতিক্রিয়ায় ভাঙচুরে জড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে, দেবীগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হেলাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, প্রথমে নৃপেন্দ্র নারায়ণ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের দুই শিক্ষকসহ প্রায় ১২ জন আহত হন।
দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, খেলার সময় কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক স্বপূর্ণ কুমার সাহা জানান, আহতদের মধ্যে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা তুলনামূলকভাবে কম আঘাতপ্রাপ্ত।
আরএ