ঢাকা, শনিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ জুলাই ২০২৫, ০০ সফর ১৪৪৭

খেলা

এক অদম্য সাবিনার গল্প

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৪৩, মার্চ ২, ২০১৫
এক অদম্য সাবিনার গল্প সাবিনা খাতুন

ঢাকা: খেলাধূলার ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা। কিন্তু সকল বাধা পেরিয়ে কিছু সৌভাগ্যবান নারী পেয়েছেন তাদের কাঙ্ক্ষিত পথের দিশা।

তাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের সহ-অধিনায়ক সাবিনা খাতুন।   

এবার তিনি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ন একটি অর্জনের পথে পা বাড়িয়েছেন। দেশের প্রথম মহিলা ফুটবলার হিসেবে সাবিনা খাতুন ৪ মার্চ মালদ্বীপ যাচ্ছেন পুলিশ ক্লাবের পক্ষে খেলতে। মালদ্বীপে আগামী ১৪ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে টুর্নামেন্টেটি।

উল্লেখ্য, তিনি বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
 
সাতক্ষীরার মেয়ে সাবিনা খাতুন। সাবেক ব্যবসায়ী বাবা ও গৃহিণী মায়ের পাঁচ মেয়ের একজন সাবিনা। ২০১১ সাল থেকে সাবিনা বিজেএমসিতে চাকরি করেন। যদিও সেখানে তিনি চাকরি করেন এ্যাথলেট হিসেবে। তারপরও ফুটবলের প্রতি তার অদম্য আগ্রহ ছিল। ২০০৯ সালে যখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়েন তখন শুরু করেন ফুটবল খেলা।

সাতক্ষীরা জেলা ফুটবল কোচ আকবর স্যারের মাধ্যমেই তার ফুটবলের হাতেখড়ি। তিনি খেলেছেন স্কুল পর্যায়ে, আন্তঃস্কুল ও আন্তঃজেলা পর্যায়েও। সেখানে ভাল খেলার সুবাদে ডাক পান জাতীয় দলে। সাতক্ষীরা থেকে সাবিনাসহ ডাক পেয়েছিল মোট ছয়জন। কিন্তু চূড়ান্ত বাছাইয়ে কেবল সাবিনাই টিকে যায়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে টানা খেলছেন তিনি। সতীর্থদের দিয়ে গোল করাতে ও গোল করতে বেশ সিদ্ধহস্ত তিনি।

সাবিনার পরিচিতি মূলত স্ট্রাইকার হিসেবেই। মজার ব্যাপার হচ্ছে শুরুতে তিনি ছিলেন মিডফিল্ডার! তবে কোচের পরামর্শে তিনি স্ট্রাইকার পজিশনে খেলতে শুরু করেন। এ পজিশনে খেলে তিনি যে কোনো ভুল করেননি, তার প্রমাণ ২০১০ সালে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা স্ট্রাইকার হিসেবে পুরস্কার পাওয়া। ওই আসরে গ্রুপ পর্যায়ে শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচে সাবিনা করেন এক গোল।

ব্রাজিলের মহিলা ফুটবল তারকা মার্তাকে আদর্শ মানেন সাবিনা। ঘরোয়া লিগ বা জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে সাবিনা বিজেএমসি বা সাতক্ষীরার হয়ে খেলার সময় প্রায়ই দেখা যায়, প্রতি ম্যাচেই তার দল ২৭-২৮টি করে গোল করছে। কিন্তু আসল রহস্য হল ম্যাচ প্রতি সাবিনা একাই গোল করে ১৩-১৪টি করে!

উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষে পড়া সাবিনা সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত পড়ালেখা করতে চান। সেই সঙ্গে খেলার পাশাপাশি চালিয়ে যেতে চান চাকরিটাও।

সাবিনার ভবিষ্যত লক্ষ্য একটাই। সবাই যেমন আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর লিওলেন মেসিকে এক নামে চেনে, পাঁচ বছর পর ঠিক সেভাবে দেশের সবাই চিনবে সাবিনাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, ০২ মার্চ ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।