ঢাকা: বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। এ নিয়ে ক্রীড়ামোদীদের আফসোসের শেষ নেই।
রোববার ফেডারেশন কাপ ফুটবলে যে নির্লজ্জ কাণ্ড ঘটল তাতে ফুটবলপ্রেমীরা এ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। হাইভোল্টেজ সেমিফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। তারকা খেলোয়াড় নিয়ে দুই দলই চলতি মৌসুমে সেরা দল গড়েছে। তাই শক্তির বিচারে তাদের ফেডারেশন কাপে ফাইনালে লড়াই করার কথা।
কিন্তু গ্রুপিং নির্ধারণের কারণে তা সম্ভব হয়নি। ম্যাচে ২-১ গোলে জয়ী হয়ে শেখ জামাল ফাইনালে গেছে। সত্যি কথা বলতে কি ম্যাচ জেতার সামর্থ ছিল দু’দলেরই। কিন্তু রেফারির সহযোগিতায় কোন দল যদি জিতে যায় তা নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্ক তৈরি হবেই।
রোববার রেফারি তৈয়ব যে পক্ষপাতিত্ব বাঁশি বাজিয়েছেন তাতে অনেকেই বলছেন, তৈয়ব কারো নির্দেশনায় আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন যে করে হোক ম্যাচে শেখ জামালকে জেতাতে হবেই। বাস্তবে কিন্তু তাই হয়েছে। ঢাকার মাঠে পক্ষপাতিত্ব নতুন কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু রোববার তৈয়ব যা করেছেন তা অতীতের সব রেকর্ডকে হার মানিয়েছে। ম্যাচে এমিলির পেনাল্টি গোলে প্রথমার্ধে শেখ রাসেল এগিয়ে থাকে।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেও ম্যাচ ছিল এমিলি-মিঠুনদের নিয়ন্ত্রণে। গোল বাড়াতে মরিয়া শেখ রাসেল। আক্রমণ ঠেকাতে শেখ জামাল বার বার ফাউলের আশ্রয় নিলেও রেফারি তৈয়ব ছিলেন নীরব। ৫১ মিনিটে শেখ রাসেলের নাইজেরিয়ান ফুটবলার কিংসলে চিকুজি বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় ফাঁকা পোস্টে বাঁধা দেন শেখ জামালের গোলরক্ষক সোহেল। তিনি শুধু বাঁধাই দেননি ডি-বক্সে বাইরে এসে হাত দিয়ে বল ধরেন। না ধরলে নিশ্চিত জালে বল যেত।
আইনে আছে গোলরক্ষক ডি-বক্সে বাইরে ধরলে তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া। সোহেল বল ধরার সঙ্গে সঙ্গে সহকারী রেফারি ঠিকই পতাকা তুলে ধরেন। তারপরও রেফারি তৈয়ব না দেখার ভান করে খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে শেখ রাসেল ফুটবলারদের আপত্তির কারণে খেলা থামাতে বাধ্য হন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনি গোলরক্ষক সোহেলকে লালের বদলে হলুদ কার্ড দেখান। এ দেখে গ্যালারির দর্শকরা অবাক হয়ে যান।
জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিক এ ব্যাপারে বলেন, 'অবশ্যই শেখ জামালের গোলরক্ষককে লাল কার্ড দেখান উচিত ছিল। ফুটবলের আইনে তা স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। রেফারি তৈয়ব এ ক্ষেত্রে আইন ভঙ্গ করেছেন।
তিনি বলেন, তৈয়ব অতীতেও অনেক বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। তারপরও তাকে এমন বড় ম্যাচে কেন রেফারির দায়িত্ব দেওয়া হলো তা বুঝলাম না। ' শুধু রেফারির পক্ষপাতিত্ব নয়। সেমিফাইনালে বাইলজ ভেঙে মাঠে নেমেছিল শেখ জামাল। ইয়াছিন এবার শেখ রাসেলে খেলবে বলে অগ্রিম পেমেন্ট নেয়। কিন্তু শেখ জামালের কাছ থেকেও আগাম অর্থ নিলে সে এবার কোন দলে খেলবে ফয়সালা হয়নি। অথচ এরপরও ২১ নম্বর জার্সি পরে সেমিতে শেখ জামালের পক্ষে মাঠে নামেন ইয়াসিন।
একদিকে রেফারির পক্ষপাতিত্ব অন্যদিকে বাইলজ ভঙ্গ। অর্থাৎ শেখ জামালকে জেতানোর জন্য যা যা করা দরকার তা বাস্তবে রূপ দিয়েছে। অনেকে বলেন, এর পেছনে বড় ইন্ধন নাকি বাফুফের সভাপতির। তাই শেখ রাসেলের ডাইরেক্টর ইনচার্জ ইসমত জামিল আকন্দ লাভলু ও ডাইরেক্টর স্পোর্টস সালেহ জামান সেলিম আক্ষেপ করে বলেছেন, খেলার আগেই যদি ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করে একটি দলকে জিতিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আর ফুটবল খেলে লাভ কি? এতে করে সরকার যতই উদ্যোগ নিক না কেন ফুটবলে উন্নয়ন ঘটবে না।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৫