বিশ্বের সবচেয়ে বড়, জনপ্রিয় ও জাঁকজমকপূর্ণ ক্রিকেট লিগ আইপিএল। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা উড়ে ভারতের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে।
ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট 'ক্রিকবাজ' জানিয়েছে, হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জগন মোহন রাওয়ের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল, হুমকি এবং দলীয় স্টাফদের ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ এনেছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ম্যাচের (২৭ মার্চ) কয়েক ঘণ্টা আগে কর্পোরেট বক্স বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগও তুলেছে তারা।
চেন্নাই-ভিত্তিক সান গ্রুপের মালিকানাধীন সানরাইজার্স রাজ্যের ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কাছে বিনামূল্যে টিকিট ও কমপ্লিমেন্টারি পাস বিতরণ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে বৈঠকের দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এবং আইপিএল পরিচালনা কমিটিকেও বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেছে।
সানরাইজার্সের পক্ষ থেকে হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এপেক্স কাউন্সিলকে পাঠানো এক ই-মেইলে বলা হয়েছে, "অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জগন মোহন রাও ভয় দেখানো, চাপ প্রয়োগ ও ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে আমাদের স্টাফদের ওপর প্রভাব বিস্তার করছেন। আইপিএল শুরু হওয়ার আগেই তিনি আমাদের কর্মীদের হুমকি দেন, যার ফলে ভয়ে তারা তাকে একটি ই-মেইল পাঠিয়ে এই বিষয়টি রেকর্ডে রাখেন। "
"লক্ষ্ণৌয়ের মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কার জন্য বরাদ্দকৃত কর্পোরেট এফ-৩ বক্স ম্যাচের কয়েক ঘণ্টা আগে জগন মোহন রাও বন্ধ করে দেন, শুধুমাত্র আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে ২০টি অতিরিক্ত বিনামূল্যের টিকিট আদায় করার জন্য। "
সানরাইজার্সের অভিযোগ, "অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আইপিএল শুরুর কয়েকদিন আগে আচমকাই দাবি করেন যে, প্রতি ম্যাচে ৩৯০০ টিকিট তার জন্য সংরক্ষণ করতে হবে, যা সাধারণ টিকিট বিক্রির বাইরে থাকবে। অথচ, আমরা এরই মধ্যে তাদেরকে ৩৯০০টি সৌজন্য টিকিট দিয়েছি। যখন আমরা বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করি, তখন তিনি কমপক্ষে ২৫০০ টিকিট বরাদ্দের দাবি তোলেন এবং হুমকি দেন যে, যদি এই টিকিট না দেওয়া হয়, তবে তিনি সহযোগিতা করবেন না। "
সানরাইজার্স আরও জানায়, তারা শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে ১০০০ টিকিট বরাদ্দ করতে রাজি হয়। কিন্তু রাও এতে অসন্তুষ্ট হয়ে আরও ২০০০ টিকিট দাবি করেন। "আমরা জোর দিয়ে বলেছিলাম, সমস্ত লেনদেন অ্যাসোসিয়েশনের অফিসিয়াল ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে হওয়া উচিত, যাতে টিকিটের স্বচ্ছতা বজায় থাকে এবং কালোবাজারি ঠেকানো যায়। কিন্তু আমাদের এই শর্তের পর থেকে তিনি আর কোনো উত্তর দেননি। "
"স্টেডিয়ামের রং করা, শৌচাগার সংস্কার, নতুন এসি বসানো এবং কর্পোরেট বক্স উন্নয়ন—এসব কিছুই আমরা (সান গ্রুপ) নিজেদের খরচে করেছি। কিন্তু জগন মোহন রাও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, এসব কাজ তিনি করেছেন। আমরা যখন তাকে ই-মেইল করে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে যৌথভাবে জানাতে বলি, তখন তিনি শুধু একটি টুইট করে আমাদের অবদানের স্বীকৃতি দেন। অথচ, প্রতিটি IPL ম্যাচ আয়োজনে আমরা তাদেরকে ১ কোটি রুপি ফি দিই। "
সানরাইজার্সের পক্ষ থেকে হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এপেক্স কাউন্সিলের কাছে বৈঠকের অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়েছে, "আমরা চাই এই সমস্যা মীমাংসার জন্য অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সরাসরি বসে আলোচনা করতে। শুধুমাত্র সভাপতি জগন মোহন রাও অপেশাদার আচরণ করছেন এবং ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে আমাদের চাপে ফেলতে চাইছেন। "
তবে এখনো পর্যন্ত হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সানরাইজার্সের বৈঠকের প্রস্তাবে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৫
এমএইচএম