ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সত্যিই অদম্য মাশরাফি

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৫
সত্যিই অদম্য মাশরাফি ছবি : শোয়েব মিথুন /বাংলানিউজটোয়েন্টি.কম

ঢাকা: বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক যোদ্ধার নাম মাশরাফি বিন মর্তুজা। বার বার ইনজুরিতে পরা মাশরাফিকে বার বার বিজয়ী করেছে তার মনের আত্মবিশ্বাস।

মাশরাফির আত্মবিশ্বাস কতটা দৃঢ় হয় তার দৃষ্টান্ত আরেকবার দেখা গেল জিম্বাবুয়ে সিরিজ শুরুর আগে।

মাশরাফি জীবনে অনেকবারই হাসপাতালে গেছেন। বেশির ভাগই গিয়েছেন খেলায় পাওয়া চোট নিয়ে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ব্যথা-যন্ত্রণা নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত এই পেসারের নিত্যসঙ্গী। সর্বশেষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে আট দিন হাসপাতালে থেকে মাশরাফি এখন অনেকটাই সুস্থ।

ডেঙ্গুজ্বর থেকে সেরে উঠলেও এখনো ম্যাচ খেলার জন্য শতভাগ ফিট নন মাশরাফি। বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) ফতুল্লায় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন নিজের ওপর চাপ প্রয়োগ করেই, ‘আমি সবমিলে ৩৫ ওভার ফিল্ডিং করেছি। পঞ্চাশ ওভার করতে পারলে ভালো হতো। আসলে প্রথম ম্যাচ থেকে চাপ নেওয়াটা কঠিন। কিছুটা চাপ প্রয়োগ করেছি নিজ থেকেই। পুরো ম্যাচ খেলতে হলে চাপ নিতেই হবে। স্বাভাবিক অবস্থায় যেভাবে থাকি, সেভাবে এখন নেই। তবে আমি খেলার ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী। ’

এই আত্মবিশ্বাস-ই মাশরাফিকে নেতা বানিয়েছে। ক্রিকেট মাঠের যোদ্ধা হিসেবে পেয়েছেন স্বীকৃতি। হয়েছেন তারকা ক্রিকেটারদেরও আইকন। শুধু ক্রিকেটার নন মাশরাফির কাছ থেকে অনুপ্রেরণা খোঁজেন সাধারণ মানুষও।

পায়ে সাতবার অস্ত্রোপচারের পরও খেলা ‍চালিয়ে যাচ্ছেন মাশরাফি। পারফর্ম করেই দলে আছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। তার অসাধারণ নেতৃত্বে সামনে এগিয়ে চলছে গোটা দল। খেলেই চলেছেন ম্যাশ। অথচ ‍অস্ট্রেলিয়ার শল্য চিকিৎসক ডেভিড ইয়াং অনেক আগেই বলে দিয়েছেন, আরেকবার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়লে পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন মাশরাফি। তখন মাশরাফি বলেছিলেন, দেশের জন্য খেলতে খেলতে মারা যাব তবুও খেলা বন্ধ করতে পারবো না। চিকিৎসকের কথায় মাশরাফি তখন খেলা থামিয়ে দেননি। পুরো ক্যারিয়ারটাই যিনি ইনজুরির সাথে যুদ্ধ করে কাটালেন, বারবার যখন ফিরে এসেছেন তখন ফিরে এসেছেন তীব্র মূর্তিতে। কি অসম্ভব তার মনের জোর!

মনের জোরেই ক্রিকেট আর দেশের টানে মাঠে ফিরে আসায় মাশরাফি ক্রিকেট বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছেন বহুবার। তার যোগ্য নেতৃত্বে টাইগাররা ধারাবাহিক সাফল্যের একটি দল হিসেবে খেতাব কুড়িয়েছে।

বার বার ইনজুরিতে পরে ফিরে আসা মাশরাফির একমাত্র অস্ত্র ছিল মনের বিশ্বাস, ‘পারবো’ এই ইতিবাচক শব্দটা। পুরোপুরি সুস্থতার আগে মাঠে নামার সিদ্ধান্তে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি মনের বিশ্বাসের কারণে। নিজের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে শনিবার (০৭ নভেম্বর) ঠিকই মাঠে নেমে পরবেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ মাশরাফি।

জ্বরের পর চেহারায় ফ্যাকাশে ভাবটা তার এখনো কাটেনি। শরীরটাও একটু ফুলে গেছে, অল্পতেই চলে আসে ক্লান্তি। জিম্বাবুয়ে সিরিজে প্রথম থেকেই খেলতে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন ক্রিকেট মাঠের এ নেতা, ‘এখনো আমি শতভাগ ফিট না। যতটুকু সেরে উঠেছি তার চেয়ে আরেকটু হলে খুব ভালো হতো। ’

এক ম্যাচ পরই হয়তো মাঠে নামা যেত। কিন্ত মাশরাফির কণ্ঠে, ‘আসলে এটা বাংলাদেশ দলের  খেলা। আর যখন মনে করি যে, আমি পারবো তখন ঝুঁকিটা নেই। আশা করি আমি পারবো। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, ০৬ নভেম্বর ২০১৫
এসকে/এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।