ঢাকা: মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পঞ্চম ম্যাচে মুখোমুখি হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবং চিটাগং ভাইকিংস। মাশরাফির কুমিল্লা ৭ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংসকে।
দিনের প্রথম এ হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। ব্যাটিংয়ে নেমে দিলশান-জিয়াউর রহমানের ঝড়ো ইনিংস আর তামিম-বিজয়ের দায়িত্বশীল ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান সংগ্রহ করে চিটাগং। জবাবে মাশরাফির ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে আর মারলন স্যামুয়েলসের দারুণ ইনিংসের সুবাদে ৭ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় কুমিল্লা।
চিটাগং ভাইকিংস: ১৭৬/৪ (২০ ওভার)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৭৭/৩ (১৮.৫ ওভার)
ফল: ভিক্টোরিয়ান্স ৭ উইকেটে জয়ী
আগে ব্যাটিংয়ের উদ্বোধন করতে চিটাগংয়ের হয়ে ক্রিজে আসেন তামিম ইকবাল এবং লঙ্কান তারকা তিলকারত্নে দিলশান। উদ্বোধনী জুটিতে ভাইকিংসের দুই ওপেনার তুলে নেন ৬৩ রান। ৭.১ ওভারে বিদায় নেন দিলশান। আশার জাইদির বলে ইমরুল কায়েসের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে দিলশানের ব্যাট থেকে আসে ৩৬ রান। লঙ্কান এ ওপেনার ২১ বল মোকাবেলা করে একটি ওভার বাউন্ডারির সঙ্গে ৬টি বাউন্ডারি হাঁকান।
চলতি আসরে রানের মধ্যে থাকা আরেক ওপেনার তামিম খেলেন ৩৩ রানের ইনিংস। জাইদির দ্বিতীয় শিকারে মাহমুদুল হাসানের তালবন্দি হয়ে বিদায় নেওয়ার আগে তামিম ৩১ বলে একটি চার আর তিনটি ছক্কায় তার ইনিংস সাজান।
দলীয় ৮৪ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় ভাইকিংস। চামারা কাপুগেদারাকে ফিরিয়ে দেন কুমিল্লার দলপতি মাশরাফি। ব্যক্তিগত ২ রান করে ম্যাশের বলে বোল্ড হন কাপুগেদারা। দলীয় ১২৩ রানের মাথায় চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন ইয়াসির আলি। ১৮ বলে দুটি চার আর একটি ছক্কায় ইনিংস সাজিয়ে ইয়াসির ২২ রান করে বিদায় নেন। ক্যারিবীয় স্পিনার সুনীল নারাইনের ঘূর্ণিতে লিটন দাস স্ট্যাম্পিং করেন ইয়াসিরকে।
১৫০ রানের কোটা টপকাবে, কি টপকাবে না এমন পরিস্থিতিতে টাইগারদের তারকা ব্যাটসম্যান এনামুল হক বিজয় ক্রিজের আরেক প্রান্তে দাঁড়িয়ে ৩৯ রানের ঝলমলে একটি ইনিংস খেলেন। অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়ার আগে তিনি ৩০ বল মোকাবেলা করে চারটি বাউন্ডারি হাঁকান। এছাড়া দেশের মাটিতে বিস্ফোরক সব ইনিংস খেলা জিয়াউর রহমান ব্যাটে ঝড় তুলে ১৬ বলে দুটি চার আর তিনটি ছক্কায় ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন।
কুমিল্লার হয়ে জাইদি দুটি, মাশরাফি এবং নারাইন একটি করে উইকেট লাভ করেন।
১৭৭ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মোটেই আশাব্যঞ্জক হয়নি কুমিল্লার। প্রথম ওভারে দলীয় ৫ রানের মাথায় ওপেনার ইমরুল কায়েস শূন্য হাতে ফেরেন। পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমিরের প্রথম শিকার ইমরুলকে সাজঘরে পাঠাতে ক্যাচ নেন দলপতি তামিম। এক ওভার পর ফের আক্রমণে আসেন আমির। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে আরেক ওপেনার লিটন দাসকে (৯) জিয়ার তালুবন্দি করেন তিনি।
দলের হাল ধরে ইনিংস এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিন নম্বরে নামা ক্যারিবীয়ান তারকা মারলন স্যামুয়েলস আর চার নম্বরে নামা শুভাগত হোম। ৪৪ রানের জুটি গড়েন তারা। ইনিংসের অষ্টম ওভারে শফিউল ফিরিয়ে দেন শুভাগতকে। তবে, দিলশানের হাতে ধরা পড়ার আগে ছোট্ট একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন শুভাগত। মাত্র ১৬ বলের ইনিংসে তিনি চারটি চার আর দুটি ছক্কায় ৩০ রান করেন।
শুভাগতের বিদায়ে মাঠে নামেন দলপতি মাশরাফি। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের যেকোনো ধরনের প্রতিযোগিতায় ঢাকা গ্লাডিয়েটরস আর কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলা এ টাইগার ক্যারিয়ার সেরা রান করেন। স্যামুয়েলসকে নিয়ে ১২৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন ম্যাশ। মাশরাফির ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৫৬ রান। তার ৩২ বলের ঝোড়ো ইনিংসে ছিল চারটি চার আর তিনটি ছক্কা।
ক্যারিবীয়ান স্যামুয়েলস খোলস ছেড়ে নিজের ব্যাটিং পারফর্মটা এ ম্যাচে দেখিয়ে দেন। ৫২ বল মোকাবেলা করে তার ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৬৯ রান। তার ইনিংসটি সাজানো ছিলো ৮টি চার আর একটি ছক্কায়।
১৮.৫ ওভার ব্যাট করে কুমিল্লা ৩ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৭৭ রান।
চিটাগং ভাইকিংস একাদশ: তামিম ইকবাল, দিলশান, এনামুল হক বিজয়, চামারা কাপুগেদারা, ইয়াসির আলি, জিয়াউর রহমান, শফিউল ইসলাম, সাঈদ আজমল, আসিফ আহমেদ, মোহাম্মদ আমির ও তাসকিন আহমেদ।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স একাদশ: মাশরাফি বিন মর্তুজা, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মারলন স্যামুয়েলস, শুভাগত হোম, আশার জাইদি, মাহমুদুল হাসান, অলোক কাপালি, ক্রিস সান্তোকি, সুনীল নারাইন ও আবু হায়দার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, ২৪ নভেম্বর ২০১৫
এমআর
** মাশরাফিদের টার্গেট ১৭৭ রান