ঢাকা: বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে শাসন করছেন এমনটি এখন আর নতুন কিছু নয়। আর টাইগারদের হয়ে বেশ ক’জন রয়েছেন যারা নিজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে অন্য দেশের ক্লাবের হয়েও আধিপত্য বিস্তার করছেন।
বর্তমান টি-টোয়েন্টির যুগে অস্তিত্ব হারাতে যাচ্ছে টেস্ট। আর জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটও পেছনে পড়ছে। তাই বিশ্ব ব্যাপী আন্তর্জাতিক টি-২০’র বাইরেও প্রায় প্রতিটি দেশ বেশ জাকজমকপূর্ণ ভাবে আয়োজন করছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-২০ টুর্নামেন্ট।
এদিকে টি-২০ ফরম্যাটের সর্বকালের সেরা একাদশ গঠন করেছে কলকাতার জনপ্রিয় পত্রিকা আনন্দবাজার। যেখানে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশ তারকা সাকিব ও মোস্তাফিজ। এ তালিকায় সর্বোচ্চ তিনজন রয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে। ভারত, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রয়েছেন দু’জন করে। আর নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার আছেন একজন করে। দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবে রয়েছেন এক ভারতীয়।
নিচে সর্বকালের সেরা একাদশ দেওয়া হলো:
ক্রিস গেইল: নিঃসন্দেহে টি-২০ ইতিহাসের সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল। এই ফরম্যাটে তার সর্বোচ্চ রান ১৭৫। ১৮টি সেঞ্চুরি এবং ৫৯টি হাফ সেঞ্চুরির মালিক গেইলের স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৫১।
ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম: বিশ্বের অন্যতম বিধ্বংসী ওপেনারকে রাখা হয়েছে ওপেনিংয়ে। আইপিএলের প্রথম ম্যাচে মাত্র ৭৩ বলে ১৫৮ রান করেছিলেন তিনি। এই ফরম্যাটে কিউই ওপেনারের ৭টি সেঞ্চুরি এবং ৩৩টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে। স্ট্রাইক রেট ১৩৭।
বিরাট কোহালি: এই মুহূর্তে বিরাটকে বাদ দিয়ে টি-২০ দল ভাবা সম্ভব নয়। মোট প্রায় ২০০টি ম্যাচ খেলে ফেলা কোহালির টি-২০তে ৪টি সেঞ্চুরি রয়েছে। গড় প্রায় ৫০।
এবিডি ভিলিয়ার্স: এই মুহূর্তে বিশ্বের যে কোনো সেরা দলে অনায়াসে জায়গা পাবেন এ বি। যে কোনো অবস্থায় ম্যাচের রং বদলে দিতে পারেন এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। মোট ২১৬টি ম্যাচে ১৪৫ স্ট্রাইক রেটে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার রান করেছেন তিনি।
সাকিব আল হাসান: বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা এই অলরাউন্ডার রয়েছেন পাঁচ নম্বরে। বাঁহাতি স্পিনার অলরাউন্ডার বল এবং ব্যাট দু’ক্ষেত্রেই দলকে সাহায্য করতে পারবে। মোট ২০৮টি ম্যাচে ২৪০টি উইকেটের পাশাপাশি ১২৩ স্ট্রাইক রেটে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রানও করেছেন তিনি।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি: ব্যাটসম্যান এবং ফিনিশার ধোনির রেকর্ড অসামান্য। তা ছাড়া অধিনায়ক হিসাবেও তার রেকর্ড দুর্দান্ত। আইপিএলে ১৪৩টি ম্যাচে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রান করেছেন তিনি। প্রায় হেরে যাওয়া বহু ম্যাচ একা হাতে জিতিয়ে দিয়েছেন ফিনিশার ধোনি।
ডোয়েন ব্রাভো: ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই পেসার অল রাউন্ডার থাকলেন সাত নম্বরে। আইপিএল, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, বিগ ব্যাশ খেলা এই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার ৩২৪ ম্যাচে ৩৪১ উইকেট নিয়েছেন। ১২৫ স্ট্রাইক রেটে পাঁচ হাজারের বেশি রানও করেছেন তিনি।
ডেল স্টেইন: দক্ষিণ আফ্রিকার এই বোলার শুধু সেরা টি-২০ একাদশ নয়, সম্ভবত টেস্ট এবং ওয়ানডে দলেও অনায়াসে সুযোগ পাবেন। আইপিএলে ডেকান চার্জার্স, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, গুজরাট লায়ন্সের হয়ে খেলা স্টেইন মোট ১৭৯টি টি-২০তে ২০১ উইকেট নিয়েছেন। বোলিং গড় ৬.৬৭।
সুনীল নারাইন: পরিসংখ্যানের দিক থেকে ক্যারিবিয়ান এই অফ স্পিনার অবশ্যই টি-২০ ক্রিকেটের সেরা বোলার। তিনিই একমাত্র বোলার যার ওভার প্রতি গড় রান ছয়ের নীচে। মোট ১৯১টি টি-২০তে ওভার প্রতি ৫.৬২ রান দিয়ে ২৪১ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান: দলে তৃতীয় পেসার হিসাবে রাখা হয়েছে দ্য ফিজকে। বাংলাদেশি বাঁহাতি সবেমাত্র ক্যারিয়ার শুরু করলেও ইতোমধ্যেই তার ক্লাস দেখিয়েছেন। আইপিএলে তার বোলিংয়ে ভর করেই লিগ জিতেছে সানরাইজার্স।
লাসিথ মালিঙ্গা: তার অদ্ভুত অ্যাকশন তাকে সবসময়েই অন্য বোলারদের থেকে আলাদা করে রেখেছে। টি-২০তে যেখানে ওভার প্রতি ৮ রানের নিচে রাখাটাকেই ভাল বোলিং বলা হয়, সেখানে এই শ্রীলঙ্কান পেসারের বোলিং গড় ৬.৬৯। ২২১টি আন্তর্জাতিক টি২০ খেলে ২৯৯টি উইকেটে নেওয়া মালিঙ্গা এই দলের পেস আক্রমণ সামলানোর দায়িত্বে।
সুরেশ রায়না: দ্বাদশ ব্যক্তি হিসাবে দলে রাখা হয়েছে সবচেয়ে বেশি আইপিএল ম্যাচ খেলা সুরেশ রায়নাকে। মারকুটে এই মিডল অর্ডার বাঁহাতির ২৪২টি ম্যাচে ১৩৯ স্ট্রাইক রেটে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার রান রয়েছে। তিনটি সেঞ্চুরি এবং ৩৬টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তার।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ১১ আগস্ট, ২০১৬
এমএমএস