মিরপুর থেকে: কাঁধের অস্ত্রোপচারের পর পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার শেষ ধাপে আছেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। নেটে বল করছেন ৫০-৬০ শতাংশ ইনটেনসিটিতে।
এমন দৃশ্য দেখে অনেকে ভেবে নিতে পারেন বোলিংয়ে ছন্দ ফিরে পেলেই বুঝি ঢাকার হয়ে ম্যাচ খেলতে নেমে পড়বেন মোস্তাফিজ! সে সুযোগ নেই। কেননা চোটের কারণে প্লেয়ার্স ড্রাফটে ছিলেন না মোস্তাফিজ। বিপিএলের চতুর্থ আসরে তাকে মাঠে নামানোর কোনো সুযোগ নেই।
তবে কাটার মাস্টারকে দলের সঙ্গে রেখে ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ বাড়ানোর সুযোগ তো আছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সামনে। ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজি মোস্তাফিজকে চেয়েছিল ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে দলের সঙ্গে যুক্ত করতে। তবে কাটার মাস্টারের তারকাখ্যাতিকে পুঁজি করতে পারছে শুধুই ঢাকা ডায়নামাইটস। তবে এজন্য মাঠের বাইরে লড়তে হয়েছে খুলনা টাইটান্সের সঙ্গে।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা ১৫ দিন আগে ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছ থেকে একটা চিঠি পেয়েছিলাম। তারা মোস্তাফিজকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করতে চায়। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে আমরা তাদেরকে অনুমতি দিয়েছিলাম, মোস্তাফিজ ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে থাকতে পারবে। তার দু’দিন পর খুলনাও আবেদন করেছিল মোস্তাফিজকে পেতে। যেহেতু ঢাকা ডায়নামাইটস আগে করেছে আমরা তাই তাদেরকে দিয়েছি। ’
গতকাল ঢাকার ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক সায়ান এফ রহমানের সঙ্গে একই সোফায় বসে ঢাকা ডায়নামাইটস ও বরিশাল বুলসের মধ্যকার ম্যাচটি দেখেন মোস্তাফিজ। কিন্তু তার সঙ্গে কোনো পরিচয়পত্র দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে মল্লিক জানান, ‘মোস্তাফিজকে এখানে সবাই চেনে। আইডি কার্ড নিয়েই ওখানে ঢুকেছে। কিন্তু আইডি কার্ড খুলে ওখানে বসেছিল। বরিশাল বুলসের মালিক ভুলু ভাই (এমএ আওয়াল চৌধুরী) সেও তো আইডি কার্ড পকেটে রেখে ওখানে বসেছে। মোস্তাফিজ প্লেয়ার্স ড্রাফটে না থাকায় প্লেয়ার হিসেবে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পায়নি। তবে টিমের পক্ষ থেকে কার্ড পেয়েছে। ’
মোস্তাফিজ ফিট থাকলে তাকে দলে ভেড়াতে মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হতো ফ্র্যাঞ্চাইজিকে। ইনজুরির কারণে বিপিএল থেকে আয় করতে পারছেন না মোস্তাফিজ। ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করে তার আয়ের পথ তৈরী করে দেয়ায় ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ধন্যবাদ জানানো উচিত বলে মনে করেন মল্লিক, ‘মোস্তাফিজ ইনজুরির কারণে বিপিএলটা মিস করছে। ওর ইনকামটা হলো না। যদি খেলতো হাইয়েস্ট পেইড (সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক) প্লেয়ার হতো দেশের মধ্যে। ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে থাকায় টিমেরও ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ছে, মোস্তাফিজ কিছু আয় করছে। আমি তো মনে করি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ধন্যবাদ দেয়া উচিত একজন প্লেয়ারকে আয়ের পথ তৈরী করে দেওয়ার জন্য। ’
বিপিএলের খুঁটিনাটি সবকিছুই সংবাদমাধ্যমকে জানাতে চেষ্টা করে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট বলে মিডিয়া কাভারেজের ব্যাপারটি এখানে বেশ গুরুত্ব পায়। কিন্তু মোস্তাফিজের মতো তারকা ক্রিকেটারকে তাদের দলে যুক্ত করতে পেরেও তার প্রচার করলো না ঢাকা ডায়নামাইটস। মিডিয়া কাভারেজ যেখানে বিপিএলে অনেকটাই মুখ্য সেখানে এমন নীরবতা রহস্যই বটে!
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৬
এসকে/এমআরএম