মিরপুর থেকে: প্লে-অফ নিশ্চিতের ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে মাঝারি পুঁজি পেয়েছে খুলনা টাইটান্স। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে নির্ধারিত ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ছয় উইকেটে ১৪১।
মাহমুদউল্লাহ ৪০ ও বেনি হাওয়েল ১২ রানে অপরাজিত থাকেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান আসে ওপেনার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানের ব্যাট থেকে।
বিপিএলের ৩৭তম ম্যাচে টস জিতে মাহমুদউল্লাহদের ব্যাটিংয়ে পাঠান মাশরাফি। দলীয় আট রান তুলতেই উইকেট হারায় খুলনা। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই রিকি ওয়েসেলসের (৪) স্ট্যাম্প ভেঙে কুমিল্লাকে ব্রেকথ্রু এনে দেন পেসার মোহাম্মদ শরিফ।
পাওয়ার প্লে শেষে সপ্তম ওভারে বোলিং প্রান্তে আসেন মাশরাফি। প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন। ক্লিন বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন আব্দুল মজিদ (১৮)। দ্বিতীয় ওভারেও কাছাকাছি গিয়েছিলেন। চতুর্থ বলটি ছুঁয়ে যায় মাহমুদউল্লাহর স্ট্যাম্প। নবম ওভারটিতে আসে মাত্র ১ রান।
নিজের তৃতীয় ওভারে এসে আবারো উইকেট উদযাপনে মাতেন কুমিল্লা দলপতি। এবার হাসানুজ্জামানকে (২৯) লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি করেন। বিরতি না নিয়ে টানা বোলিং করে যান তিনি।
বোলিং স্পেলের শেষ ওভারেও (১৩তম) পান সাফল্য। নিকোলাস পুরানকে (১৪) ইমরুল কায়েসের ক্যাচে পরিণত করেন মাশরাফি। চার ওভারে ১৬ রান খরচায় তুলে নেন তিনটি উইকেট। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে চাপের মুখেই পড়ে খুলনা। ১৬তম ওভারে দলীয় একশ’ পার করে তারা।
১৭তম ওভারে পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটান তরুণ আফগান লেগস্পিনার রশিদ খান। ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন আরিফুল হক (১৩)। পরের ওভারেই শুভাগত হোমকে (২) রশিদ খানের ক্যাচবন্দি করেন পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
এদিকে, শুক্রবারের (২ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় ম্যাচে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা ঢাকা ডায়নামাইটসের মুখোমুখি হবে তামিমের চিটাগং ভাইকিংস। সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় হাইভোল্টেজ ম্যাচটি শুরু হবে।
সাকিবদের হারাতে পারলে তামিম-গেইলের চিটাগংয়ের শীর্ষ চারে থেকেই প্লে-অফ রাউন্ড সুনিশ্চিত হবে। একই সমীকরণের সামনে খুলনা। এখনো দু’টি করে ম্যাচ বাকি থাকায় হেরে গেলেও সুযোগ থাকবে।
চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচটিতে (১৭ নভেম্বর) স্বাগতিকদের ১৯ রানে হারিয়েছিল ঢাকা। এর চারদিন আগে টুর্নামেন্টের প্রথম দেখায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বিপক্ষে ১৩ রানের জয় পায় খুলনা।
এবারের আসরে ধুঁকতে থাকা কুমিল্লা দেরিতে হলেও শেষদিকে এসে ছন্দ খুঁজে পেয়েছে। শেষ চারের আশা শেষ হয়ে গেলেও টানা দুই জয়ে তারা অন্য দলগুলোর জন্য হুমকি! নিজেদের সবশেষ ম্যাচটিতে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে আট উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নেয় মাশরাফির দল।
অন্যদিকে, টানা পাঁচ জয়ে উড়ছে চিটাগং। গত ২৯ নভেম্বর তামিমদের কাছে পাঁচ উইকেটে হেরে টানা দ্বিতীয় পরাজয়ের স্বাদ পায় খুলনা। দুর্দান্ত গতিতে ছুটছে ঢাকা। দু’দিন আগে রংপুর রাইডার্সকে ৪২ রানে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয় তুলে নেয় শিরোপার অন্যতম দাবিদার।
সাত দলের পয়েন্ট টেবিলে ১০ ম্যাচ শেষে শীর্ষে থাকা ঢাকার সংগ্রহ সাত জয় ও তিন হারে ১৪। দুই পয়েন্ট করে পিছিয়ে যথাক্রমে দুইয়ে চিটাগং ও তৃতীয় স্থানে খুলনা। ছয় পয়েন্টে তলানিতে কুমিল্লা। ১০ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে রংপুর। সমান পয়েন্টে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় চার নম্বরে এক ম্যাচ বেশি খেলা রাজশাহী। ১১ ম্যাচে মাত্র চার জয়ে ছয়ে অবস্থান করছে মুশফিকের বরিশাল বুলস।
কুমিল্লা একাদশ: ইমরুল কায়েস, আহমেদ শেহজাদ, মারলন স্যামুয়েলস, খালিদ লতিফ, রশিদ খান, নাবিল সামাদ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোহাম্মদ শরিফ।
খুলনা একাদশ: রিকি ওয়েসেলস, মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, আব্দুল মজিদ, নিকোলাস পুরান (উইকেটরক্ষক), শুভাগত হোম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আরিফুল হক, মোশাররফ হোসেন রুবেল, জুনাইদ খান, শফিউল ইসলাম, বেনি হাওয়েল।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৬
এমআরএম