পরে একাডেমির কোচের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে তিনিও মত দেন স্পিনার হতে। কিন্তু যে কম উচ্চতার জন্য পেস বোলিং ছাড়া পরের বছরগুলোতে স্পিনার নাঈম হাসান ফিরে পেয়েছেন সেই বাড়তি উচ্চতা।
কি আশ্চর্য! ক্রিকেট জীবনের শুরুতে ওই উচ্চতা নামক দৈব দুর্বিপাকে না পড়লে নাঈম হাসানের স্পিনারই হওয়া হতো না। আজ যখন সেই স্পিন বিষের কল্যাণেই বছর সতেরোতেই জাতীয় দলের দরজা খুলে গেল নিশ্চয়ই তখনকার কম উচ্চতার কাছে কৃতজ্ঞ নাঈম হাসান।
কারণ তখন উচ্চতা এখনকার আশেপাশে হলেই যে পেস বোলিং ছাড়া তো দূর অস্ত, সবাই বেশি করে সেই বোলিংয়েই পড়ে থাকতে উৎসাহ দিতেন! পেস বোলিং দিয়ে এতো দ্রুত জাতীয় দলে আসা যেত কিনা তা অবশ্য কোটি টাকার প্রশ্নই।
জাতীয় দলের স্কোয়াডের গন্ধ গায়ে মেখেই সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দলের সঙ্গে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরু করেছেন নাঈম হাসান। অনুশীলনের ফাঁকে উত্তেজনায় ভরপুর নাঈম হাসান শোনালেন তার পেস বোলার থেকে স্পিনার হওয়ার সেই গল্পটা।
বলেন, ‘আমি ক্রিকেট শুরু করেছি পেস বোলিং দিয়ে। তবে তখন আমার উচ্চতা এতো বেশি ছিল না। একদিন আমার একাডেমির বড় ভাইরা পরামর্শ দিলেন স্পিনার হতে। তখন অবশ্য আমার একাডেমির কোচ মমিন ভাই দেশে ছিলেন না। তিনি দেশে ফিরলে তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলি। তিনিও স্পিনার হওয়ার বিষয়ে মত দেন। তিনি নিজেও স্পিনার ছিলেন। এরপর থেকে আমি স্পিন বল করা শুরু করি। ’
প্রথম টেস্টের একাদশে নাঈমের অন্তর্ভুক্তি ছিল বড় বিস্ময়ের মতোই। নাঈম নিজেও ভাবেননি এতো দ্রুত চলে আসবে সুযোগ। তাও অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বড় ব্যবধানে হারা ম্যাচ শেষে এমন সুখবর! এই টিনএজারের স্বপ্নের মতোই কাটছে এই কয়েকটা দিন।
নাঈম বলেন, ‘অ-১৯ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ১৩১ রানের বিশাল ব্যবধানে হারার পর মন খারাপ ছিল। এসময় আমাদের ম্যানেজার জানালেন জাতীয় দলের টেস্ট স্কোয়াডে আমার সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি। খবরটি শুনে খুব ভালো লেগেছিল। এরপর আমার সতীর্থরা অভিনন্দন জানালেন। বললেন সুযোগ পেলে ভালো খেলবে। পরে নিউজিল্যান্ড থেকে দেশে ফেরার সময়ও খুব ভালো অনুভূতি হচ্ছিল। ’
এতো দ্রুত সুযোগ চলে আসবে আশা করেছিলেন? এমন প্রশ্নে নাঈমের জবাব, ‘এতো দ্রুত হবে আশা করিনি। তবে অ-১৯ বিশ্বকাপ খেলার পর মিরাজ (মেহেদি হাসান) ভাইয়ের মতো আমারও জাতীয় দলে ডাক আসবে এমনটা ভেবেছিলাম। কিন্তু এতো দ্রুত চলে আসবে ভাবিনি। ’
আপনার বোলিংয়ের শক্তির জায়গা কোনটা? নাঈম হাসানের ভাষ্য, ‘উচ্চতার কারণে বাড়তি বাউন্সটা ভালো পাই। তাই আমার বোলিংয়ে বাড়তি শক্তির জায়গা ওই বাড়তি বাউন্সই। ’
কম উচ্চতার কারণে পেস বোলিং ছেড়ে স্পিন বোলিং শুরু করা। এখন বেশি উচ্চতার কারণে সেই স্পিনে বাড়তি সুবিধা পাওয়া। উচ্চতা শব্দটা যেন লেগেই থাকলো নাঈম হাসানের জীবনের সঙ্গে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭
টিএইচ/টিসি/এমআরএম