ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

একজন ‘আন্ডাররেটেড’ গুরুত্বপূর্ণ সাকিব কথন

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৮
একজন ‘আন্ডাররেটেড’ গুরুত্বপূর্ণ সাকিব কথন ব্যাটিংয়ে সাকিব আল হাসান

ঢাকা: আইপিএলে দুর্দান্ত খেললেও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ‘অবমূল্যায়ন’ করা হয়, বাংলাদেশি ক্রিকেটভক্তদের এমন অভিযোগ বেশ পুরনো। সম্প্রতি সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণও স্বীকার করেছেন, ভালো পাফরম্যান্স সত্ত্বেও সাকিব আল হাসান ‘অবমূল্যায়িত’ থাকেন। কেন এই অভিযোগ বা পর্যবেক্ষণ? ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো খুঁজে বের করেছে এমন কিছু কারণ। 

ছন্দপতন থাকলেও ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই এক নম্বর অলরাউন্ডারের জায়গা বেশিরভাগ সময়েই থাকছে সাবিক আল হাসানের দখলে। তবু কি বাংলাদেশি এ তারকা পাচ্ছেন তার প্রাপ্য মূল্যায়ন? এমন এক প্রশ্নের জন্ম থেকেই এসেছে কিছু হিসেব-নিকেশ।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) নিলামে মাত্র ২ কোটি রুপিতে সাকিবকে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের কিনে নেওয়াকে সবচেয়ে অবমূল্যায়ন মনে করছে ক্রিকইনফো।

একজন প্রকৃত অলরাউন্ডার যে কোনও দলের জন্য বড় সম্পদ। আসলে একজন প্রকৃত অলরাউন্ডার খুঁজে পাওয়া যে কোনও দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জও বলা যায়। আর এই ধারণা থেকেই হয়তো বেশ কিছু অলরাউন্ডারকে উচ্চ মূল্যে কিনেছে আইপিএলের দলগুলো।

এদের মধ্যে ইংলিশ ক্রিকেটার বেন স্টোকস সাড়ে ১২ কোটি রুপি, ক্যারিবিয়ান তারকা আন্দ্রে রাসেল সাড়ে ৮ কোটি রুপি, ভারতীয় তারকা হার্দিক পান্ডিয়া ১১ কোটি রুপি, ক্রুনাল পান্ডিয়া ৮ কোটি ৮০ লাখ রুপিতে বিক্রি হয়েছেন। কিন্তু নিলামে সাকিবকে কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে কেবল রাজস্থান রয়্যালস ও হায়দ্রাবাদ। আর স্টোকস ও হার্দিকের ছয় ভাগের একভাগ এবং রাসেল ও ক্রুনালের প্রায় চার ভাগের একভাগ অর্থে সাকিবকে কিনেছে হায়দ্রাবাদ।

হায়দ্রাবাদের মিডল অর্ডারে থাকা মনিষ পান্ডে, ইউসুফ পাঠান ও ঋদ্ধিমান সাহা এখন পর্যন্ত চোখে পড়ার মতো কিছুই করতে পারেননি। আফগান স্পিনার রশিদ খান যে দামে (৭ কোটি ২০ লাখ রুপি) কেনা হয়েছে, তার পারফরম্যান্স বিচারে এখন তা ‘ওভাররেট’ই মনে হচ্ছে।  

এমন প্রেক্ষাপটে সাকিবের জ্বলে ওঠা ছাড়া কোনও পথ ছিলো না নিজেকে প্রমাণের। আর তিনি সেটা খুব ভালোভাবেই করেছেন। আইপিএলে এখন পর্যন্ত ১২ উইকেট পেয়েছেন সাকিব, যার মধ্যে চারটিই পেয়েছেন ধুমধাড়াক্কা মারের পাওয়ার প্লেতে। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত করা মোট বলের মধ্যে ৪১.৬৬ শতাংশ বলই ডট দিয়েছেন, যা এ পর্যন্ত সবার চেয়ে বেশি। প্রথম ৬ ওভারে বল করা বোলারদের মধ্যে সাকিবই সবচেয়ে কম বাউন্ডারি দিয়েছেন। প্রতি ৫ বলে একটি করে বাউন্ডারি হজম করেছেন তিনি।

সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত বল হাতে ওভারপ্রতি মাত্র ৭.৭২ করে রান খরচ করেছেন সাকিব। যার ফলে পাওয়ার প্লে’র শেষভাগ থেকে শুরু করে মাঝের ওভারগুলোয় বোলিং নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি হায়দ্রাবাদকে। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা থেকে হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও যথাযথ পরামর্শ পান সাকিবের কাছ থেকে। এটাও একজন অলরাউন্ডারের গুণের মধ্যেই পড়ে।

১২ ম্যাচে সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছে মূল্যবান ১৬৬ রান। যার মধ্যে ত্রিশোর্ধ স্কোর ছিলো একটি। এরমধ্যে ১৪ এপ্রিল রাতে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে ম্যাচে দুই উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি মূল্যবান ২৭ রানের ইনিংসের পর কেন তাকে ম্যান অব দ্য ম্যাচ করা হলো না, সে নিয়েও আলোচনা উঠেছিল।  

কার্যকর এমন বোলিং-ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়ে দুরন্ত সাকিব হায়দ্রাবাদের পাশাপাশি বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বেও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের একজন অমূল্য রত্ন। এই রত্নের দর কি সত্যিই এতো কম?

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৮
এমকেএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।