ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

কনকাশন বিতর্কের ম্যাচে জিতল ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২০
কনকাশন বিতর্কের ম্যাচে জিতল ভারত কনকাশনের পর জাদেজার মাথা নয়, পায়ের পরিচর্যা করতে দেখা গেছে/ছবি: সংগৃহীত

সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ১১ রানে হারিয়েছে ভারত। কিন্তু ম্যাচের জয়-পরাজয় ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে কনকাশন বিতর্ক।

 

ঘটনাটি ভারতীয় ইনিংসের শেষ ওভারের। অজি ফাস্ট বোলার মিচেল স্টার্কের বাউন্সার রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাটের উপরিভাগে লেগে হেলমেটে আঘাত করে। আগুনে গতির বলটি জাদেজার হেলমেটে লেগে উড়ে যায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। সেখানে ফিল্ডিংয়ে থাকা মোয়েজেস হেনরিকস ক্যাচটা ধরতে পারেননি। এরপর ওই ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে দুটি বাউন্ডারিও হাঁকান জাদেজা।  

ভারতীয় ইনিংসের শেষে জানা যায়, কনকাশনের শিকার এই বাঁহাতি। অর্থাৎ মাথায় আঘাত লাগায় ধোঁয়াটে দেখছেন তিনি। সাবেক অজি ব্যাটসম্যান ফিল হিউজের মৃত্যুর পর কনকাশন নিয়ে কড়াকড়ি করেছে আইসিসি। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, কেউ মাথায় আঘাত পেয়ে কনকাশনের শিকার হলে, তার পরিবর্তে অন্য ক্রিকেটার মাঠে নামতে পারবেন। সেই বদলি খেলোয়াড় এমনকি ব্যাটিং ও বোলিংও করতে পারবেন।

জাদেজার কনকাশন সাবস্টিটিউট হিসেবে মাঠে নামেন যুজবেন্দ্র চাহাল। পরে চাহাল ৪ ওভার বোলিং করেছেন। আর জাদেজার চোট তেমন গুরুতর নয় বলে ভারতীয় দলের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। কিন্তু জাদেজার কনকাশন সাব নামানোর ব্যাপারটায় নিয়ম মানা হয়েছে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অজি কোচ জাস্টিন লেঙ্গার এবং সাবেক দুই ক্রিকেট তারকা টম মুডি ও মাইকেল ভন।

জাদেজার কনকাশন সাব হিসেবে চাহাল মাঠে নামা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হেড কোচ আপত্তি তোলেন। তিনি এমনকি ম্যাচ রেফারি ও তার সাবেক সতীর্থ ডেভিড বুনের সঙ্গে তর্কেও জড়ান। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক ভন ও সাবেক অজি ক্রিকেটার ও কোচ মুডিও প্রশ্ন তোলেন। তাদের আপত্তি একটাই, আঘাত পাওয়ার পর জাদেজাকে কোনো চিকিৎসক বা ফিজিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে মাঠে যাননি। এরপর আবার জাদেজার পায়ে কিছু একটা হয়েছে বলে মনে হলো। কিন্তু তার মাথার চোট নিয়ে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি তখন। তাহলে কনকাশন সাব কেন?

কনকাশন বিতর্কের সমাধান না হলেও ম্যাচটি জিতে নিয়েছে ভারত। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান করে কোহলিবাহিনী। সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ ৫১ রান আসে ওপেনার লোকেশ রাহুলের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৪ রান আসে জাদেজার ব্যাট থেকে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়া এই বাঁহাতি ২৩ বল খেলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজিয়েছেন তার ইনিংস।

বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার পেসার হেনরিকস ৩টি, স্টার্ক ২টি এবং জাম্পা ও সয়েপসন ১টি উইকেট তুলে নিয়েছেন।

এদিকে জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান তুলতে সক্ষম হয় অস্ট্রেলিয়া। ওপেনিং জুটিতে ৫৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন দুই অজি ওপেনার ডা'র্সি শর্ট ও অ্যারন ফিঞ্চ। কিন্তু ২৬ বলে ৩৫ রান করে চাহালের বলে ফিঞ্চ বিদায় নিলে ভাঙে এই জুটি। এরপর ১২ রান করে স্টিভ স্মিথ ও ২ রান করে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বিদায় নিলে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় অস্ট্রেলিয়া। শেষদিকে ২০ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন হেনরিকস। কিন্তু ততক্ষণে জয় থেকে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে স্বাগতিকরা।

বল হাতে ভারতের কনকাশন সাব চাহাল ৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন। সমান উইকেট গেছে নটরাঞ্জনের দখলে। এক উইকেট তুলে নিয়েছেন দীপক চাহার।

সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হলো, শুরুতে একাদশে না থাকা চাহাল সাব হিসেবে নেমে ম্যাচ সেরাও নির্বাচিত হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।