প্রতিটি যুদ্ধের পরই পুরো বিশ্ব নড়েচড়ে বসে। কার ভাণ্ডারে কী কী অস্ত্র আছে, সেসবের ওপর একবার চোখ বোলানো হয়।
ইন্টেলিজেন্স, সার্ভিলেন্স, টার্গেট আসিকুইজিশন এন্ড রেকোননাইসেন্স সংক্ষেপে ‘ইস্টার’ (আইএসটিএআর) নামের ওই গুপ্তচর বিমানের জন্য ১.২ বিলিয়ন ডলার খরচ করবে ভারত। উন্নত ওই বিমান দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদানের জন্য থাকছে অত্যাধুনিক সেন্সর, যোগাযোগ ব্যবস্থা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে বিমানটি যুদ্ধে সুনির্দিষ্ট নজরদারি এবং আক্রমণ সমন্বয় করতে পারে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই শক্তি অর্জন করবে ভারত।
এই উড়ন্ত গোয়েন্দায় বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা ব্যবস্থা, ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল, রাডার, সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স আর ইলেকট্রনিক ইন্টেলিজেন্স আছে। ফলে যুদ্ধক্ষেত্রের বিস্তারিত বর্ণনা হাতে থাকবে।
এখনকার যুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রের ছবি যত বিস্তারিত আর আধুনিক হবে, যুদ্ধজয়ের পথে ততই এগিয়ে থাকা যাবে। ইস্টার বিমানগুলো যুদ্ধে ভারতের রিয়েল-টাইম গোয়েন্দা নজরদারি, লক্ষ্যভেদ আর পুনরুদ্ধার ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে।
এমন শক্তিধর গোয়েন্দা বিমান কেন দরকার ভারতের? ২০১৯ সালের বালাকোট বিমান হামলার পর এমন পরিস্থিতির বিস্তারিত জানাবোঝার গুরুত্ব টের পায় ভারত। এরপর ২০২০ সালে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চীনের অভিযানের সময় ভারত বুঝতে পারে, যুদ্ধক্ষেত্রের তাৎক্ষণিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে তাদের ঘাটতি আছে। এখন ইস্টার বিমান দেশটির সামরিক সক্ষমতা বাড়াবে। সেইসঙ্গে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে দেশটির স্বনির্ভরতাও বাড়বে।
ইস্টার প্রকল্পে সম্ভবত বোয়িং বা বোম্বার্ডিয়ার তিনটি বিমান নেওয়া হবে। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও সেগুলোকে উন্নত দেশীয় সেন্সর এবং ইলেকট্রনিক সিস্টেম দিয়ে সাজাবে। এসব বিমান কমপক্ষে ৪০ হাজার ফুট উচ্চতায় কমপক্ষে আট ঘণ্টা টানা কাজ করবে। ফলে মিলবে টেকসই নজরদারি।
বিমানটিতে থাকবে ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি রেঞ্জের সিনথেটিক অ্যাপারচার রাডার। ফলে মেঘের ভেতর থেকে বা অন্ধকারেও মাটিতে থাকা লক্ষ্যবস্তুর নিখুঁত ছবি তোলা যাবে। ১৫০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকার মধ্যে চলমান লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত এবং নজরদারিতে রাখতে পারবে ওই বিমান।
বিমানগুলোতে থাকছে উচ্চ-ডেটা-রেট লাইন-অফ-সাইট এবং স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে কৃত্রিম উপগ্রহ, চালকহীন আকাশযান মাটিতে থাকা নির্দেশনাকেন্দ্রের সঙ্গে সহজে তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে।
ইলেকট্রো-অপটিক্যাল বা ইনফ্রারেড সেন্সর দিয়ে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করা যাবে। সেগুলোর থার্মাল ইমেজিংও পাওয়া যাবে। প্রদান করে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম থাকায় তথ্য বিশ্লেষণের গতি আসবে, নির্ভুল তথ্য মিলবে। ফলে চলতে থাকা টার্গেটকে সবসময় নজরদারিতে রাখা আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক্ষ্যবস্তু সনাক্ত করা সম্ভব হবে।
এমএইচডি/এমএম