ঢাকা, সোমবার, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

বাঘ রক্ষায় পথে নামল শিশুরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কলকাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:২৬, জুলাই ২৯, ২০১৩
বাঘ রক্ষায় পথে নামল শিশুরা

কলকাতা: আজ ২৯ জুলাই আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র সংরক্ষণ দিবস। সোমবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে স্কুলপড়ুয়া ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ধূমধাম করে পালন করল ‘বাঘ উৎসব।



বড়রা এ নিয়ে গা না করলেও সুন্দরবনের বেশ কিছু অনাথ ছেলেমেয়েদের বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে। তার ফলশ্রুতিতে বাসন্তীর ‘চম্পা মহিলা সোসাইটি’ নামে একটি সংস্থার উদ্যোগে এদিন একশোরও বেশি কচিকাঁচা পথে নামে।
    
নদী এলাকায় যারা বসবাস করেন, তাঁদের কাছে বাঘ বাঁচানোর আবেদন জানিয়েছে ছোটরা। পরিবেশ সচেতন ওইসব আশ্রমবাসী এদিন সকালে বৃষ্টি মাথায় করে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, পথ নাটিকা ও গান গেয়ে বাঘ বাঁচাতে সকলকে এগিয়ে আসার আর্জি জানায়।
    
বাঘ যাতে বন ছেড়ে গ্রামে আসতে না-পারে, সেজন্য বন দফতর জঙ্গলের চারপাশে নাইলনের জাল দিয়ে গোসাবার লোকালয়ের উলটো দিকের সজনেখালি, দয়াপুর, জেমসপুর, লাহিড়িপুর, জঙ্গল ঘিরে রেখেছে।

ঘেরা হয়েছে ঝড়খালি হেড়োভাঙা জঙ্গল, কুলতলির কাছে চিতুড়ির জঙ্গলও। তবুও সেই জাল ছিঁড়ে বাঘ অবাধে গ্রামে ঢুকে পড়ছে। বাঘের সঙ্গে বাঘরোল, বন বিড়াল, মেছো বিড়াল, হরিণ, শুয়োর, সাপ, ভোঁদড়, গন্ধগোকুল, বন মুরগি, নাম না-জানা পাখিরাও পথ ভুল করে দিক হারিয়ে মানুষের কাছাছাছি চলে আসে।

এজন্য আক্রান্তও হচ্ছে নিমেষে। তবে এদের বাঁচাতে বন দফতরও নানাভাবে প্রচার চালাচ্ছে। সুন্দরবনে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা কত, তা নিয়ে আজও সংশয় রয়ে গিয়েছে। বন দফতর দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল, সুন্দরবনে দু‘শোর বেশি বাঘ রয়েছে। সেই সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে বলেও কাগজে-কলমে হিসেব দেখিয়ে আসছিল।

২০০৪ সালের গণনার হিসাবে দেখানো হয়েছিল এই নদী ঘেরা ম্যানগ্রোভ বনের ১১০টি দ্বীপে ২৭৪টি বাঘ রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকার ২,৫৮৫ বর্গ কিলোমিটার জঙ্গলের ৭১টি দ্বীপের ১,৬৭৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ২৪৯টি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বন বিভাগের অধীনের ৩৯টি দ্বীপে ২৫টি বাঘ রয়েছে।

কিন্তু এই হিসেবে পানি মেশানো রয়েছে বলে কিছু বাঘ বিশেষজ্ঞ এবং সুন্দরবনের কর্মরত বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত কয়েকটি সংগঠন প্রশ্ন তুলেছিল। সেই অভিযোগ নিয়ে দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। রাজ্য বন দফতরের কর্তারা নিজেদের যুক্তিতে অনড় থেকে ২০০৬ সালের আবার ৫ থেকে ১০ জানুয়ারি গণনার কাজ চালায়।

কিন্তু পরে সেই গণনার ফল জানা যায়নি। এরপর ডব্লিউডব্লিউএফ নামে একটি সংস্থা ক্যামেরা বসিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আনুমানিক হিসাব দিয়ে জানিয়েছে, সুন্দরবনের ৯০ থেকে ১০০টির মতো বাঘ রয়েছে। তা হলে বাকি বাঘগুলি গেল কোথায় ? এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বনকর্তারা।

বাংলাদেশ সময় : ১২১৫ ঘণ্টা,  জুলাই ২৯, ২০১৩
এসপি/ সম্পাদনা: এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।