ঢাকা: চা-বাগান, বন আর পর্বতে ঘেরা দার্জিলিংয়ের কোনো কিছুই পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়। আজকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলাদা হওয়ার যে দাবি দার্জিলিয়ে উঠেছে সেজন্য সেখানকার লোকদের দোষ দেয়া যায় না।
টাইমস অব ইন্ডিয়ায় ‘হোয়াই দ্য বেঙ্গালিজ হ্যাভ টু লেট গো অব দার্জিলিং’ শীর্ষক এক নিবন্ধে এমন মন্তব্য করেছেন পত্রিকাটির সিনিয়র এডিটর আনন্দ সুন্দাস।
তেলেঙ্গানাকে পৃথক রাজ্য হিসেবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বীকৃতির পরেই পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে শুরু হয়েছে একই দাবিতে আন্দোলন-বিক্ষোভ।
নিবন্ধে বলা হয়েছে, স্বাধিকার বা পৃথক রাজ্যের দাবিতে দার্জিলিংবাসীদের আন্দোলনে বিস্মিত হবার কিছু নেই। আজ থেকে একশ বছর আগেই তারা পৃথক প্রশাসনিক অঞ্চলের দাবি জানিয়েছিল ব্রিটিশদের কাছে। ১৯০৭ সালে হিলমেন’স অ্যাসোসিয়েশন অব দার্জিলিং মিন্টো-মরলে কমিশনের কাছে স্মারকলিপি দেয়।
নিবন্ধে আনন্দ দার্জিলিংবাসীদের এ পদক্ষেপকে রাষ্ট্রের মর্যাদা ও পরিচিত পেতে ভারতের পুরোনো ও দীর্ঘতম আন্দোলনের মধ্যে অন্যতম হিসেবে উল্লেখ করেছেন ।
তিনি বলেছেন, ১৯৮০’র দশকে নিজেদের রাষ্ট্রের দাবিতে নতুন করে সংগঠিত আন্দোলন শুরু হয় দার্জিলিংয়ে। সুভাষ ঘিশিং গড়ে তোলেন গোর্খাল্যান্ড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (জিএনএলএফ) গড়ে তোলেন। রাষ্ট্র বাহিনীর ও প্যারামিলিটারি বিশেষ করে সিআরপিএফের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয় তাদের। সরকারি বাহিনী হত্যা, ধর্ষণসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী সবধরণের অপরাধ করে সেসময়। কিন্তু সেসব মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে উঠে আসেনি। সেসময় ১ হাজার ২০০ জন প্রাণ হারায়।
১৯৮৮ সালে আধা-স্বায়ত্তশাসিত দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিলের মর্যাদা প্রদানের ভিত্তিতে সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করেন সুভাষ। এজন্য তার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অন্যান্য সহযোদ্ধারা ‘নিজের আত্মা’ বিক্রির অভিযোগ আনেন।
সুভাষের শিষ্য বলে পরিচিত বিমল গুরাং জিএনএলএফ থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন করে আন্দোলন শুরু করেন। ২০০৮ সালে তিনি গড়ে তোলেন নতুন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে অর্জনের জন্য আন্দোলনে নামেন তিনি।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার নিবন্ধে বলা হয়েছে, দার্জিলিংকে ১৮১৪ সালে নিজেদের শাসনের আওতায় আনে ব্রিটিশ শাসকরা। ১৮৩৭ সালে দার্জিলিংকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের শাসিত অঞ্চলভুক্ত করা হয়। আর আজকে যে দার্জিলিং জেলা তার সীমানা ১৮৬৬ সালে ঠিক করে দেয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর-eic@banglanews24.com