ঢাকা: দেশের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিত্ব রাজার জন্মদিনের প্রতি সম্মান জানিয়ে সরকারের সঙ্গে আগামী বেশ কিছু দিনের জন্য সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছেছে থাইল্যান্ডের সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা।
মঙ্গলবার বিরোধী ও শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ভয়েস অব রাশিয়া এ খবর জানিয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল পারাডন প্যাতথানাথাবুত সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমাদের পিতৃতুল্য রাজার জন্মদিনের সম্মানে দু’পক্ষই আগামী বেশ কিছু দিন শান্তি বজায় রাখার ব্যাপারে মতৈক্যে পৌঁছেছি।
প্যারাডন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার নির্দেশে বিক্ষোভকারীদের সরকারের প্রধান কার্যালয় ‘গভর্নমেন্ট হাউসের’ আঙ্গিনায় ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারা সেখানে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছে। একইসঙ্গে মেট্রোপলিটন পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর অন্য কার্যালয়গুলোর সামনে থেকে ব্যারিকেড সরিয়ে নিয়েছে পুলিশ। এ কারণে সেখানেও অবাধ যাতায়াত করতে পারছে সরকারবিরোধীরা।
সরকার বিরোধীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়াবে না এমন সিদ্ধান্ত জানানোর পরও বিক্ষোভকারী দলের প্রধান নেতা সুথেপ থাউগসুবান মঙ্গলবার হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ইংলাককে ক্ষমতাচ্যুত না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন তারা।
তিনি সরকারের সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছানোর সিদ্ধান্তকে বিক্ষোভকারীদের আংশিক বিজয় দাবি করে বলেন, ইংলাক সরকারের শাসনের অবসান না ঘটানো পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো।
সহিংসতা এড়াতে বিক্ষোভকারীদের পাশে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
সরকরের মুখপাত্র তেরাত রাতানাসেবি জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা চাইছে সরকারি কার্যালয় দখল করতে, কিন্তু সরকার তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের সংঘাতে জড়াতে চায় না, এজন্য পুলিশকে নীরব থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডের সবচেয়ে সম্মানিত ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিত্ব রাজা ভূমিবল আদুলায়েজ। ১৯২৭ সালের ৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সে হিসেবে আগামী বৃহস্পতিবার তার জন্মদিন। রাজার জন্মদিনকে কেন্দ্র করে আগামী ক’দিন থাইল্যান্ডের পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত ২৪ নভেম্বর একটি আইন প্রণয়নকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ গত শনিবার পর্যন্তই শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়সহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদরদফতর নিয়ন্ত্রণে নিতে গেলেই সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয় এবং বিরোধীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ছোঁড়ে।
প্রায় দেড় সপ্তাহব্যাপী এই বিক্ষোভে ৪ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয় বলে নিশ্চিত করে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, ওই আইন প্রণয়ন করে দুর্নীতির মামলা থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তার বোন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক। একইসঙ্গে থাকসিনই মূলত বিদেশ থেকে ইংলাকের সরকারের নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ করছেন বিক্ষোভকারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৩