আগরতলা (ত্রিপুরা): চন্দ্রপুরের ডিমাতলী মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে উদ্ধার হল প্রায় দেড়শ বছর পুরানো রৌপ্য মুদ্রা। প্রথমে স্থানীয় মানুষ নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যান খুঁজে পাওয়া প্রাচীন মুদ্রা।
পরে অবশ্য তারা তা ফিরিয়ে দিয়ে যান। এখন পর্যন্ত ৩৬টি রুপার মুদ্রা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
সংহতি মেলার জন্য সংস্কার চলছিল চন্দ্রপুর মসজিদের। তখনই এক শ্রমিকের কোদালের আঘাতে ভেঙ্গে যায় একটি ছোট মাটির কলসি। আর তা থেকে বেড়িয়ে আসে প্রচুর রুপার মুদ্রা।
এভাবে মুদ্রা উদ্ধার হওয়াতে হতচকিত হয়ে পড়েন সবাই। মুদ্রাগুলির গায়ে ছিল মহারানি ভিক্টোরিয়ার ছবি এবং চতুর্থ উইলিয়ামসের ছবি। ১৮২৫ থেকে ১৮৪০ সালের মাঝা মাঝি সময়ের মুদ্রা এগুলি।
উদ্ধার হবার পর স্থানীয় মানুষ জন তা নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক সুধন দাস। স্থানীয় প্রশাসন থেকে বোঝানো হয় গ্রামবাসীদের। তারা যেন মুদ্রা ফেরত দিয়ে দেন।
বিধায়ক নিজেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের বুঝিয়ে আসেন। শেষ পর্যন্ত বুধবার ৩৬টি রুপার মুদ্রা ফিরিয়ে দিয়ে যান এলাকার মানুষ। গ্রামবাসীরা যত্ন করেই নিজেদের ঘরে রেখেছিলেন সেইসব মুদ্রা।
তাদের বিশ্বাস এই মুদ্রা তাদের ঘরে থাকলে তাদের মঙ্গল হবে। সুধন দাস জানিয়েছেন, ৬ ডিসেম্বর সংহতি মেলার দিন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া হবে এই মুদ্রা। যাতে তা রাখা যায় আগরতলা স্টেট মিউজিয়ামে।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন ৮৫টি মুদ্রা পাওয়া গিয়েছিল মসজিদ প্রাঙ্গণে। এই মসজিদটিকে নিয়ে ইতিহাস আছে। অনেকে বলেন, এই মসজিদটি মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময়ের।
আবার অনেকে দাবি করেন মসজিদটি তৈরি হয়েছিল ৭০৩ হিজরিতে। অর্থাৎ বর্তমান সময় থেকে প্রায় ৭২৫ বছর আগে। কিন্তু কোন দাবিই যথেষ্ট নয় এই মসজিদের জন্ম ইতিহাস নিয়ে।
তবে মসজিদটি শতাব্দী প্রাচীন তা জানিয়েছে ভারত সরকারের আর্কোলোজিক্যাল সার্ভে। তাদেরই দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল মসজিদটি অধি গ্রহণ করে সংরক্ষণের জন্য।
চন্দ্রপুরের মসজিদটির যে ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে তা আবার প্রমাণ হল মুদ্রা উদ্ধারের মধ্য দিয়ে। এই মসজিদটি নিয়ে আরও গবেষণা হোক তাই চাইছেন স্থানীয় মানুষ।
১৯৯২ সালে রাজনগর থেকে কিছুটা দূরে জঙ্গলের মধ্যে উদ্ধার করা হয় একটি অর্ধভগ্ন মসজিদ। একেবারে ভাঙ্গাচোরা অবস্থায়। ঐ মসজিদ থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বাংলাদেশ। সাধারণ জমি থেকে প্রায় একশ মিটার উঁচুতে একটি টিলার উপর ছিল এর অবস্থান।
এটাই আজকের চন্দ্রপুর ডিমাতলী মসজিদ। ১৯৯৩ সাল থেকে ঐ ভাঙ্গা মসজিদের প্রাঙ্গণে শুরু হয় সংহতি মেলা। এ বছরও হবে সংহতি মেলা- ৬ ডিসেম্বর।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৩