ঢাকা: বিশ্ব মানবাধিকার আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ব নেতারা।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও জর্জ ডব্লিউ বুশ, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা, ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জী, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহু, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন প্রমুখ।
এক শোক বার্তায় বান কি মুন বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ম্যান্ডেলা ছিলেন এক কিংবদন্তি উদাহরণ। ম্যান্ডেলা দেখিয়েছেন বিশ্বের জন্য আমরা কী করতে পারি। এছাড়া, ন্যায়বিচার ও মানবতার পক্ষে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আমরা যে স্বপ্ন দেখি তাও আমাদের শিখিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার শোকবার্তায় বলেন, একজন মানুষ তার জীবনে যা কিছু অর্জন করতে পারেন, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্জন করেছেন ম্যান্ডেলা। তার মৃত্যুতে বিশ্ব একজন প্রভাবশালী, সাহসী ও প্রগাঢ় ব্যক্তিত্বকে হারালো।
পৃথিবী থেকে একটি আলোকরশ্মি হারিয়ে গেলো। তিনি ছিলেন আমাদের যুগের বীর। নিজের শোকবার্তায় এমন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা বলেন, ম্যান্ডেলার মৃত্যুতে জনগণ পিতা হারালো। আমরা জানতাম, আজকের দিনটি আমাদের কাছে হাজির হবে, যা আমাদের জন্য কষ্ট ও ক্ষতির কারণ হবে। স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম তাকে বিশ্ব দরবারে সম্মানিত করেছে। তার নম্রতা, আবেগ ও মানবতা তাকে বিশ্ববাসীর কাছে ভালোবাসার পাত্র হিসেবে তৈরি করেছে।
ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুর্খাজী বলেন, ম্যান্ডেলা ছিলেন রাষ্ট্রনায়ক, বিশ্বনেতা ও মানবতার এক দৃষ্টান্ত। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পকের জন্য তাকে ভারতরত্ন পুরস্কার দেওয়া হয়।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ম্যান্ডেলা ছিলেন আমাদের সময়ের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি ছিলেন ‘ম্যান অব ভিশন’। যিনি সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে ঘৃণা করতেন। তিনি ‘নতুন’ দক্ষিণ আফ্রিকার পিতা হিসেবে যুগের পর যুগ স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে ম্যান্ডেলার ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। একটি জাতিকে পুনর্গঠনে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন বলেন, তার মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়। বিশ্ববাসী তার শূন্যতা অনুভব করবে।
মানুষের মর্যাদা ও স্বাধীনতার অধিকার আদায়ের জন্য ম্যান্ডেলার অবদান ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন।
মাদিবার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের নেতারা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৫ বছর (১৯১৮-২০১৩) বয়সে মারা যান কিংবদন্তি এ নেতা। ম্যান্ডেলা বহুদিন ধরে ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৩