আফ্রিকার দেশ সুদান। ২০১০ সালে বিশ্বের দ্রুত বিকশিত অর্থনীতির দেশ হিসেবে আলোচনায় আসে দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, লোহিত সাগর, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, চাদ ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ঘেরা সুদান।
দেশটির অর্থনৈতিক বিকাশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত তেল। কিন্তু সুদান থেকে সাউথ সুদান আলাদা হয়ে যাওয়ায় তেল খাত থেকে আয়ের বড় একটা অংশ সুদানের হাতছাড়া হয়ে যায়।
দেশটির শতকরা ৮০ ভাগ মানুষের জীবিকা নির্বাহের উপায় কৃষিকাজ। কিন্তু কৃষিকাজের তেমন অগ্রগতি হয়নি বিগত দশকগুলোতে। সম্প্রতি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে দেশটির কৃষি ও পশু সম্পদ খাতে।
সুদানের পরিবেশগত কারণে দেশটিতে গরুর আকার হয় ক্ষীণকায়। তাই দুধ উৎপাদনও কম। দুধ উৎপাদন বাড়াতে বিদেশ থেকে বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ড থেকে গরু এনে পালন শুরু করেছেন অনেকে।
সুদানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারকারী হচ্ছে আল-ওয়াহা। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক ডিএএল। সুদানের রাজধানী থেকে কয়েক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে ডিএএল’র একটি গরুর খামার আছে। এ গরুর খামার অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের একেবারে বাস্তব উদাহরণ।
এ খামারে ব্যবহৃত প্রযুক্তির কথা শুনে বিস্মিত না হওয়ার কোনো উপায় নেই। এখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ঘরে গরু রাখা হয়।
পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে কৃত্রিম পরিবেশে রাখা হয় এসব গরু। দিনের বেশির ভাগ সময়ই গরুগুলোকে রাখা হয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে। গরুগুলোকে ঠাণ্ডা রাখতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে শীতল পানির ঝড়নার সুব্যবস্থা আছে।
শুধু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর নয়, প্রতিটি গরুর গলায় আছে একটি করে বৈদ্যুতিক হার (লেকলেস)। ওই বৈদ্যুতিক হারের মাধ্যমে গরুর স্বাস্থ্য, গর্ভবতী হওয়া সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানা যায়।
এখানো সুদানের অধিকাংশ ডেইরি ফার্ম সেকেলে পদ্ধতিতে চলছে। সেখানে আজও খোলা আকাশের নিচে গরুর দুধ দোহানো হয়। তবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে বলে জানান ওই ফার্মের ব্যবস্থাপক ড. মোহাম্মেদ সাঈদ।
বিদেশি দুধ দোহানো যন্ত্রের মাধ্যমে মাত্র ১০ মিনিটে ৫৬টি গরু দোহানো ও স্বাস্থ্যসম্মত ট্যাঙ্কে দোহানো দুধ জমানো যায়। শুধু দুধের উৎপাদন বেড়েছে তা নয়, গরুর বাচ্চা জন্মদানও বেড়েছে। মোহাম্মেদ সাঈদ বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচগুণ সংখ্যক বেশি গরুর বাছুর উৎপাদন করতে পারছি।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৩