ঢাকা: বাড়িতে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। সেখানে আটকা পড়ে প্রাণভয়ে গগণবিদারী চিৎকার করছেন নারী-শিশুসহ স্বজনরা।
কিন্তু, মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও এই অগ্নিগহ্বরেই ঝাঁপ দিয়ে সেখান থেকে ৬ স্বজনকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনলো নিউইয়র্কের ৮ বছর বয়সী এক শিশু! কিন্তু মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে সপ্তম জনকে বাঁচাতে যাওয়ার পর। বাঁচাতে পারলো না সপ্তম ব্যক্তিকে, নিজেও ফিরতে পারলো না সুন্দর পৃথিবীতে। দুঃসাহসিকতার সর্বোচ্চ প্রমাণ দিয়ে আগুনে ভস্ম হয়ে জীবন দিলো সে!
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, গত রোববার রাতের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নারী ও দুই শিশুসহ ৬ স্বজনকে উদ্ধার করে বিস্ময়বালক টেইলর ডুহান! কিন্তু প্রিয় নানাকে বাঁচাতে গিয়ে আর ফিরতে পারলো না দুঃসাহসী টেইলর।
সিএনএন অনলাইন বুধবার রাতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, শেষ প্রচেষ্টায় নিজের সবচেয়ে ভালো বন্ধু প্রতিবন্ধী নানাকে বাঁচাতে গিয়েই প্রাণ যায় টেইলরের।
পেনফিল্ড শহর ফায়ার সার্ভিসের প্রধান ক্রিস এবমিয়ার জানান, ইস্ট রোচেস্টারের বাসিন্দা টেইলর রোববার রাতে পেনফিল্ডের নিকটবর্তী একটি শহরে আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছিলো। হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা চোখে পড়তেই সে দুঃসাহসিকতার সঙ্গে স্বজনদের বাঁচাতে আগুনের লেলিহান শিখায় ঝাঁপ দেয়।
তিনি জানান, জরুরি উদ্ধার সহায়তা চেয়ে ভোররাত পৌনে পাঁচটার দিকে ফায়ার সার্ভিসে একটি কল আসে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগেই ৪ বছর ও ৬ বছর বয়সী দুই শিশুসহ ৬ জনকে নিরাপদে উদ্ধার করে টেইলর।
ফায়ার সার্ভিসের প্রধান জানান, সপ্তম ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে গিয়ে আর ফিরতে পারেনি সে। খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা। প্রতিবন্ধী নানাকে বাঁচাতে গিয়ে লাশ হয়ে যায় সে। বাড়ির পেছন দিক থেকে ধেয়ে আসা আগুনের ফুলকি ও তীব্র ধোঁয়া টেইলর ও তার নানার প্রাণ কেড়ে নেয়।
উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়ির পেছনের দিকের একটি কক্ষে তাদের দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
মা ক্রিস্টা ভ্রুম্যান জানান, টেইলর তার নানাকে সবচেয়ে কাছের বন্ধু মনে করতো।
ভ্রুম্যান সংবাদ মাধ্যমগুলোকে বলেন, আমার ছেলের এই সাহসিকতায় আমি গর্বিত, এটা সত্যিই গর্বের ব্যাপার। কিন্তু তাকে হারানোর ব্যথা আমি সহ্য করতে পারছি না, তাকে ফেরত চাই!
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৪