ঢাকা: যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের পরও দক্ষিণ সুদানের বিভিন্ন স্থানে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। চার সপ্তাহ ধরে চলা সংঘর্ষে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষর হয়। বিষয়টিকে দেশটিতে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপনের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
চুক্তি স্বাক্ষরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দিলেও উভয়পক্ষ এখনও অপর পক্ষের হামলার আশঙ্কা করছে।
দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ মিশনের সহকারী মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের পরও দক্ষিণ সুদানের কিছু কিছু স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পূর্বমুহূর্তে তেল সমৃদ্ধ উত্তরাঞ্চলীয় ইউনিটি প্রদেশ ও পূর্বাঞ্চলীয় জংলি অঞ্চলে বিদ্রোহীদের উপর সেনাবাহিনী আক্রমণ করছে বলে অভিযোগ করে বিদ্রোহীদের মুখপাত্র রোয়াই কোয়াং বলেন, সরকারি বাহিনীর সঙ্গে উগান্ডার সেনারাও আমাদের বিভিন্ন ঘাঁটিতে আক্রমণ করছে। এমন যুক্তিবিবর্জিত হামলার বিরুদ্ধে তাদের নিজেদের রক্ষার অধিকার রয়েছে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
অপরদিকে সরকারি বাহিনীর মুখপাত্র ফিলিপ অ্যাগুয়ের বলেন, যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরের পূর্বে বিদ্রোহীরা সরকারি বাহিনীর উপর আক্রমণ করলে জংলি প্রদেশে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এদিকে যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরের পরও লুঠতরাজ ও গোত্রীয় সংঘাত না থামায় দেশটিতে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্ষুধার্ত জনতা জাতিসংঘের খাদ্য গুদাম থেকে খাবার লুট করেছে বলেও জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা।
এ পরিস্থিতিতে সহিংসতার আশঙ্কায় ৭৬ হাজারেরও বেশি মানুষ জড়ো হয়েছেন শান্তিরক্ষী ক্যাম্পগুলোতে।
রাজধানী জুবায় একটি খেলার মাঠে স্থাপিত শান্তিরক্ষী ক্যাম্পে আশ্রয় গ্রহণ করা শরণার্থীদের একজন ডেভিড চাউল বলেন, আমি মনে করি না যে বাসিন্দাদের কেউ এখনই ক্যাম্প ছেড়ে চলে যাবে। তারা বরং পরবর্তীতে কী ঘটে তা দেখার অপেক্ষায় থাকবে।
সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিদ্রোহীদের নেতা রিক মাচারের অনুগত বাহিনীর বাইরে থাকা বিদ্রোহীদের শান্তি চুক্তি মানতে বাধ্য করা কঠিন হবে বলে ধারণা করছেন অনেকে। এমনকি মাচার তার অনুগত সব যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হতে পারেন বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে এ ধরনের আশঙ্কা নাকচ করে দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা জন গারাংয়ের স্ত্রী রেবেকা গারাং বলেন, আমি মনে করি তিনি (মাচার) সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সবাইকেই নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৪