ঢাকা: ফেসবুকের প্রত্যেক ব্যবহারকারীর একটি করে পরিচিতি (আইডি) নাম্বার রয়েছে। অ্যাকাউন্ট খোলার সঙ্গে সঙ্গে এ নাম্বারটি সক্রিয়ভাবে তৈরি হয়ে যায়।
প্রথম দিকের কয়েক লাখ ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট নাম্বার দেওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিতে। যেমন হার্ভার্ডের ব্যবহারকারীদের ০-৯৯৯৯৯, কলম্বিয়ার ব্যবহারকারীদের ১০০০০০-১৯৯৯৯৯, স্টানফোর্ডের ব্যবহারকারীদের ২০০০০০-২৯৯৯৯৯ এ সংখ্যার ভিতরে আইডি নাম্বার দেওয়া হতো।
২০০৫ সালে কলেজশিক্ষার্থীদের যখন ফেসবুকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হলে তখন ফেসবুকের ব্যবহারীর আইডি দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসল। এরপরের বছর সবার জন্য ফেসবুক উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে আইডি ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ঘটে আমূল পরিবর্তন।
ফেসবুকের প্রথম দিকে এর ব্যবহারকারীদের চিহ্নিত করা যেত তাদের এক বা দুই ডিজিটের আইডি নাম্বার দিয়ে। ফেসবুকের সঙ্গে শুরুর দিকে যারা কাজ করেছিলেন তাদের অনেকে অন্যত্র চলে গেছেন, আবার অনেকে আছেন।
ফেসবুকের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠাতাদের একজন মার্ক জুকারবার্গ থাকলেও তার সহযোদ্ধাদের অনেকেই নেই। কিন্তু প্রতিষ্ঠাতাদের কেউই প্রথম অ্যাকাউন্টধারী ছিলেন না। অ্যাকাউন্টের ভিত্তিতে মার্ক জুকারবার্গ চতুর্থ, তবে ব্যবহারকারী হিসেবে তিনি প্রথম।
প্রথম তিনটি অ্যাকাউন্ট পরীক্ষার জন্য সংরক্ষিত। এই তিনটির পরের অ্যাকাউন্টধারী হচ্ছেন জুকারবার্গ। তার বন্ধু ও ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা চেরিস হগস রয়েছেন পঞ্চমে ও ডস্টিন মস্কোভিৎজ হচ্ছেন ষষ্ঠ অ্যাকাউন্টধারী।
হগস ফেসবুকের প্রথম মুখপাত্র ছিলেন। ২০০৮ সালে ফেসবুক ছেড়ে দিয়ে অনলাইনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বারাক ওবামার নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্ব নেন।
ফেসবুকের প্রযুক্তিগত বিষয়টি দেখভাল করতেন মস্কোভিৎজ। তিনিও ২০০৮ সালে ফেসবুক ছেড়ে ‘আসানা’ নামে সফটওয়্যার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করেন।
আর জুকারবার্গের তৃতীয় সহযোদ্ধা এদুয়াদো সাভেরিনের আইডি ছিল ৪১!
ফেসবুকের আরেক সহ প্রতিষ্ঠাতা ম্যাককলামের আইডি ২৬। জুকাবার্গের ক্লাসমেট ম্যাককলাম এখন নিউ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েটস নামের একটি মূলধনী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
হার্ভার্ডের গ্রাজুয়েট ও জুকারবার্গের বন্ধু আরেই হাসিত প্রতিষ্ঠাতা নন এমন ব্যক্তি হিসেবে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলেন।
২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে যাত্রা শুরু হয়েছিল বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবহারকারীর এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির।
চেরিস হগস, ডস্টিন মস্কোভিৎজ, এদুয়ার্দো সাভেরিন, অ্যান্ডু ম্যাককলামামকে সঙ্গে নিয়ে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা করেছিলেন মার্ক জুকারবার্গ।
প্রথম দিকে শুধু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফেসবুক ব্যবহার করতে পারতেন। পরবর্তীতে বোস্টনের কলেজগুলোতে, আইভি লিগ ও স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফেসবুকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়।
যাত্রার এক বছর পেরুতে না পেরুতে কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ফেসবুক উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপর ১৩ বছর বয়সীরাও ফেসবুক ব্যবহার সুযোগ পান। এখনও ফেসবুক ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা বহাল রয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতাদের বিভিন্নজন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগ বা নতুন প্রতিষ্ঠানের পত্তন করে ফেসবুক ছেড়ে চলে গেলেও প্রধান উদ্যোক্তা ফেসবুকের হাল ধরে রেখেছেন। অল্প বয়সেই তিনি বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিতি পেয়েছেন, উঠে এসেছেন বিশ্বের বিত্তশালী, প্রভাবশালীদের তালিকায়।
তিনি বর্তমানে ফেসবুকের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের হিসাব মতে, জুকারবার্গের ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ এক হাজার ৯শ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের।
ফেসবুকের বাজারমূল্য বর্তমানে এক হাজার ৩৪০ কোটি মার্কিন ডলারের ঊর্ধ্বে। ২০১৪ সালের জানুয়ারির শেষের হিসাব মতে, ফেসবুকের ব্যবহারকারী সংখ্যা ১২৩ কোটি।
দশম বছর পূর্তির একমাস আগে জানুয়ারিতে ফেসবুকের প্রধান অপারেটিং অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গ বলেছিলেন, ‘তিনি (মার্ক জুকারবার্গ) সব সময়ই বলে, শুধু একটি কোম্পানি হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য নয়, বিশ্বকে সংযুক্ত করার স্বপ্নপূরণের বাসনা নিয়ে ফেসবুকের যাত্রা শুরু হয়েছিল।
** ১১ বছরে ফেসবুক
বাংলাদেশ সময়: ০১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৩
আন্তর্জাতিক
ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতারা প্রথম অ্যাকাউন্টধারী নন!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।