লন্ডন: বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত তেল রপ্তানিকারী দেশ সৌদি আরবের তেলভান্ডার মার্কিন কূটনীতিকদের কাছে ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। উইকিলিকের ফাঁস করা গোপন মার্কিন কূটনৈতিক তারবার্তা ব্রিটেনের দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বুধবার প্রকাশ করেছে।
ওই তারবার্তায় যুক্তরাষ্ট্র আশংকা করে, ক্রমেই উর্ধ্বমুখী তেলের মূল্য ঠেকাতে সৌদি আরবের যথেষ্ট মজুদ নেই। রিয়াদের মার্কিন দূতবাস থেকে ওয়াশিংটনে তারবার্তায় এ তথ্য জানা গেছে।
সৌদি সরকারের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওয়াশিংটনকে তীব্রভাবে সতর্ক করে জানায়, সৌদি আরবে তেলের মজুদ ৩০ হাজার কোটি ব্যারেল অর্থাৎ ৪০ শতাংশ বেশি করে দেখানো হয়েছে।
বৈশ্বিক পরিসরে ব্যারেল প্রতি তেলের মূল্য ১০০ মার্কিন ডলার ও মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় এই মুহূর্তে এ খবর প্রকাশ পেল। তবে বিশ্লেষকরা আশা করছেন, চাহিদা মিটিয়ে তেলের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে সৌদি ব্যবসায়ীরা এবং তাদের জোট ওপেক আরও তেল উৎপাদন করতে পারবে।
সাদাদ আল-হোসাইনি নামের একজন ভূতত্ত্ববিদ এবং সৌদি আরবে একচেটিয়া তেলকোম্পানি অ্যারামকোর সাবেক প্রধান ২০০৭ এর নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিনিধির সঙ্গে রিয়াদে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এই কূটনীতিককে বলেন, অ্যারামকোর প্রতিদিন এক কোটি ২৫ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদনের লক্ষ্যে পৌঁছালে মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানো সম্ভব। তবে সে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব না বলেও তিনি জানান।
ফাঁস হওয়া এই তথ্যে আরও জানা যায়, ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালে হোসাইনি বলেন আগামী দশ বছরের মধ্যে সৌদি আরব এক কোটি ২০ রাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করতে পারবে কিন্তু এর আগে ২০১২ সালেও তা করা সম্ভব। এর মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক তেল উৎপাদন সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছাবে। এ অবস্থাকে ‘পিক অয়েল’ বলা হয়।
এখানে আরও বলা হয়, ‘আল-হোসাইনির কথা অনুযায়ী এই জটিল বিষয়টি দুইভাগে বিভক্ত। প্রথমত, সৌদি আরবে তেলের মজুদ বিষয়ে যে পরিমাণের কথা উল্লেখ করা হয়, আসলে তা নয়। দ্বিতীয়ত, উৎপাদনের জন্য যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে অ্যারামকো এবং জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতৈক্য না হওয়া। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১১