ঢাকা: উদীয়মান অর্থনৈতিক পরাশক্তির ‘প্রগতিশীল’ দেশ কিংবা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ যাই হোক- ভারত এখও ধর্ম-জাতিগত গোঁড়ামি ও বর্ণ বিভাজনের অন্ধকারে নিমজ্জিত। দেশটিতে ভিন্ন ধর্মের বিয়ে তো দূরে থাক, এখনও প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ বর্ণ বিচার করে বিয়ে করেন, অর্থাৎ মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ বিয়ে করেন ভিন্ন বর্ণে!
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড ইউনিভার্সিটি ও ভারতের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর অ্যাপলায়েড ইকোনমিক রিসার্চ (এনসিএইআর) পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা শেষে এমন তথ্যই দেওয়া হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতজুড়ে প্রায় ৪২ হাজার পরিবারের ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন গবেষকরা।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলমান সময়ে মাত্র ৫ দশমিক ৪ শতাংশ লোক ভিন্ন বর্ণের মানুষের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ রয়েছেন।
এর আগে, ইন্ডিয়ান হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট সার্ভে (আইএইচডিএস) ২০০৪-০৫ সালে একই বিষয়ের ওপর সমীক্ষা চালায়।
ম্যারিল্যান্ড ও এনসিইএআর’র গবেষকরা জানান, ১০ বছর আগে গবেষণার যে ফলাফল ছিল, এখনও প্রায় তাই।
গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভিন্ন বর্ণের বিয়ের উদাহরণ সবচেয়ে কম মধ্যপ্রদেশে, মাত্র ১ শতাংশ। তবে, গুজরাট ও বিহার এক্ষেত্রে খানিকটা প্রগতিশীল হয়ে উঠেছে। এ দু’টি রাজ্যে ভিন্ন বর্ণের বিয়ের হার ১১ শতাংশ।
২৫ শতাংশ লোক অস্পৃশ্যতার মানসিকতা বহন করে
এছাড়া, আইএইচডিএস পরিচালিত এক গবেষণা অনুযায়ী এখনও ভারতে প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ অস্পৃশ্যতার মতো অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া মানসিকতা বহন করে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ গ্রামীণ ও ২০ শতাংশ শহুরে পরিবার এ ধরনের মানসিকতা ধারণ করেন।
গবেষকরা জানান, গবেষণায় অংশ নেওয়া পরিবারগুলোকে জিজ্ঞেস করা হয়- তারা নিম্ন বর্ণ বা ভিন্ন ধর্মের কাউকে রান্না ঘরে ঢুকতে কিংবা বাসন-কোসন স্পর্শ করতে দেয় কিনা।
জবাবে জানা যায়, ৩০ শতাংশ গ্রামীণ ও ২০ শতাংশ শহুরে পরিবার এখনও তাদের রান্নাঘরের আশেপাশে নিম্ন বর্ণ বা ভিন্ন ধর্মের কাউকে ছায়া ফেলতে দেয় না।
ব্রাহ্মণদের ক্ষেত্রেই অস্পৃশ্যতায় ডুবে থাকার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। ৬২ শতাংশ গ্রামীণ ব্রাহ্মণ পরিবার ও ৩৯ শতাংশ শহুরে ব্রাহ্মণ পরিবার অস্পৃশ্যতাকে সাধারণভাবেই প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৪