ঢাকা: ‘অমরত্বের প্রত্যাশা নেই, নেই কোনো দাবি দাওয়া...এই নশ্বর জীবনের মানে, শুধু তোমাকেই চাওয়া...!’
কবীর সুমনের এই গান চীনা প্রেমিক ইউ হাইনিংয়ের কানে খুব সম্ভবত পৌঁছায়নি। কিন্তু এই গানের ‘জীবন্ত গায়ক’ যেন নিজেই হয়ে গেলেন হাইনিং।
চীনা সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, পাঁচ বছর চুটিয়ে প্রেম করে প্রণয়কে পরিণয়ে রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন হাইনিং-ফ্যান যুগল। হাইনিং চাকরিতে থিতু হয়ে যখনই বিয়ের মালা বদলের কথা ভাবতে শুরু করেছেন, তখনই এলো চরম দুঃসংবাদ। মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত ফ্যান, জীবনের একেবারে শেষ প্রান্তে পৌঁছেছেন।
চিকিৎসকরা জানিয়ে দিলেন, আর কিছুই করার নেই। কিন্তু কী করবেন হাইনিং? যে ফ্যানকে ভেবে কোটি সেকেন্ড পার করেছেন- সেই ফ্যানকে আপন করে কি নেওয়া হবে না?
তড়িঘড়ি চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে শ্যানডং প্রদেশ থেকে হেনানের ঝেংঝুয়াউতে চলে আসেন প্রেমিকার পাশে থাকতে।
মরণব্যাধি তখন সব শেষ করে দিয়েছে ফ্যানের শরীরের। কেমোথেরাপিতে তার মাথার সব চুলও উঠে গেছে।
যমের অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকা প্রেমিকাকে আপন করে নিতে আর দেরি করতে পারলেন না হাইনিং। প্রেমিকা ও তার স্বপ্ন পূরণে বিয়ের মালা বদলের সিদ্ধান্ত নেন।
প্রথমে হাইনিংয়ের এই সিদ্ধান্তকে পাগলামি ধরলেও পরে তার আবেগের কাছে হার মানে সবাই।
ব্যস, হাসপাতালের কেবিনেই ফ্যানের সামনে হাঁটু গেড়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন পাগলপ্রেমিক হাইনিং।
জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছেন ভেবে প্রথমে রাজি হননি ফ্যান। কিন্তু হাইনিংয়ের ভালোবাসার কাছে হার মানতে হয় তাকেও।
শেষ অবধি সোমবার (১৭ নভেম্বর) হাসপাতালেই সাজানো হলো বিয়ের আসর। ফ্যানকে নববধূর সাজ দিলেন হাসপাতালের সেবিকারাই। আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে মৃত্যু পথযাত্রী ফ্যানের হাতে পরিণয়ের আংটি পরিয়ে দেন হাইনিং। স্বপ্ন পূরণ করেন নিজের, স্বপ্ন পূরণ করেন ফ্যানের।
মৃত্যু শয্যাশায়ী প্রেমিকা ফ্যানের উদ্দেশে হাইনিং বলেন, ‘ভালোবেসে আমি বরাবর তোমার হাত ধরে থাকবো। ভালোবেসে আমি কোনো জাদু’র অপেক্ষাও করবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৪