কায়রো: মিশরের ঐতিহাসিক তাহরির স্কয়ারে জমায়েত বিক্ষোভাকরীদের হটিয়ে দিতে সামরিক পুলিশের ঝটিকা অভিযানে ২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ১৮ জন বিক্ষোভকারী।
মিশরে অন্তর্বর্তী সামরিক সরকারের পতনের দাবিতে শনিবার কায়রোর তাহরির স্কয়ারে হাজার হাজার জনতা জড়ো হয়েছেন।
শনিবার সকালে প্রায় ৩০০ সেনা হঠাৎ করে তাহরির স্কয়ারে প্রবেশ করে। বিক্ষোবকারীদের অভিযোগ এ সময় তাদের লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। সেনারা গুলি করেছে বলেও দাবি করেন তারা। আহতরা সবাই বুলেটে আঘাতপ্রাপ্ত হলেও সেনাবাহিনী তা অস্বীকার করেছে।
সেনাবাহিনীর এক জন মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা রয়টারকে বলেন, শুধু ফাঁকা গুলি করা হয়েছিল।
সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে কারফিউ উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করার জন্য জনগণকেই দোষারোপ করা হয়। কেউ হতাহত হয় নি বলেও দাবি করা হয়।
উল্লেখ্য, কায়রোতে রাত ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ অব্যাহত রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশ ও জনগণের স্বার্থবিরোধী যে কোনো তৎপরতা সহ্য করা হবে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা তাহরির স্কয়ারের রাত ভর অবস্থান নেয়া কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে ছত্রভঙ্গ করে দিতে ফাঁকাগুলি ছোঁড়ে।
ঠিক এ জায়গাতেই মাসাধিককাল আগে লাখ লাখ মানুষ জমায়েত হয়ে মোবারক সরকারের পতন ঘটায়।
শনিবার সকালে প্রায় ২শ জন বিক্ষোভকারী হাত নেড়েনেড়ে সেনা প্রধান ফিল্ড মার্শাল হোসেইন তানতাবিকে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানান। এসময় চত্বরের চারদিকে সৈন্যরা অবরোধ সৃষ্টি করে রাখে। চত্বরের মাটিতে রক্তের দাগ ও পাথরের স্তুপ দেখা যাচ্ছিল।
এর আগে গতকাল শুক্রবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ক্ষমতাচ্যূত প্রেসিডেন্ট হুসনি মোবারকের বিচার এবং অন্তর্বর্তী সরকারে মোবারক সরকারের নেতৃত্বস্থানীয় কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। এসময় সামরিক পুলিশ শান্তিপূর্ণ র্যালিতে বিক্ষোভকারীদের পিছে পিছে চলছিল।
প্রসঙ্গত, মোবারকবিরোধী আন্দোলনের সময় এই সামরিক বাহিনী বিক্ষোভকারীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে। এতে তারা জনগণের সাধুবাদ পেয়েছে। কিন্তু শনিবার জনগণের সেই মনোভাবের একেবারে বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হলো। এদিন তারা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সেøাগান দেয়।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন ছাত্র মালিক আসাম এএফপিকে বলেন, ‘আমি তাহরির স্কয়ারে এসেছি কারণ আমরা একটি প্রতিবিপ্লবের আভাস পাচ্ছি। ’
অপর একজন ছাত্র আনাস মোহামেদ বলেন, ‘আমি সামরিক বাহিনীর অন্য একটা রুপ আশা করেছিলাম। এখন যদি তারা এভাবে চলতে থাকে তারা জনগণের অন্য রুপ দেখতে পাবে। ’
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বের হওয়া বিক্ষোভ র্যালিতে কমপক্ষে ৭ জন ভিন্ন মতাবলম্বি সেনা কর্মকর্তা যোগ দেন। তাদের দাবি সেনাবাহিনীতে শুদ্ধি প্রয়োজন। তারা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মাঝরাত পর্যন্ত অবস্থান করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১১