ঢাকা: ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের যেসব স্থানে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে, তার একটি কম্পটয়ের ভলটেয়ার ক্যাফে। সেখানে বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে একজন ডেভিড (৪৬)।
একটি সংবাদমাধ্যমকে ডেভিড জানিয়েছেন, কম্পটয়ের ভলটেয়ার ক্যাফের কাছেই তিনি বাস করেন। হামলার কিছু আগে সেখানে তিনি এক বন্ধুর সঙ্গে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। ঠিক যে মুহূর্তে ওয়েটার তাদের অর্ডার করা খাবার নিয়ে আসেন, তখনই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে।
তিনি বলেন, চারপাশে তখন শুধু আগুনের লেলিহান শিখা আর আবর্জনা। মনে হচ্ছিলো, আমি কোনো উনুনে পড়ে গেছি। প্রথমে ভেবেছিলাম, গ্যাসের চুলা বিস্ফোরিত হয়েছে। চিৎকার করে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করতে বলছিলাম। চারদিক আতঙ্কে ছেয়ে গিয়েছিল। বিস্ফোরণের পরপরই ক্যাফের মানুষগুলো ছুটে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। আমিও দ্রুত আমার টেবিল ছেড়ে সিঁড়িপথে চলে গেলাম।
এ পর্যায়ে প্রথমে একজন নারী ও পরে একজন যুবকের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন ডেভিড। যুবকটি রক্তের বন্যায় ভাসছিলো, তবে তার জ্ঞান ছিলো তখনও। পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে, ডেভিড যে যুবকের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, সে আর কেউ নয়, ওই রেস্টুরেন্টে হামলাকারী স্বয়ং। তার নাম আব্দেসলাম।
ডেভিড ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, যুবককে সাহায্য করার সময় আমি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি, সে-ই হামলাকারী। বাকিদের মতো সেও ওই ক্যাফেতে ক্রেতা বেশে এসেছিলো। আমি ভেবেছিলাম, গ্যাস বিস্ফোরণে সে গুরুতর আহত হয়েছে।
ডেভিড জানান, তিনি আব্দেসলামকে রেস্টুরেন্টে ঢুকতে দেখেননি। খুব সম্ভবত সে সিঁড়িপথের কাছেই বসেছিলো এবং সেখানেই বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
তিনি বলেন, যখন আমি তার টি-শার্ট খুললাম, এর ভেতর তার দেখতে পেলাম। সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলাম, এটা মোটেই কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়।
ডেভিড জানান, আব্দেসলামের দেহে চারটি ভিন্ন রঙের তার দেখতে পান তিনি। এগুলো হলো, সাদা, কালো, লাল ও কমলা।
তিনি বলেন, প্রথমে আমি লাল তারটি দেখতে পাই। খুব সম্ভবত এটিই ডেটোনেটর।
এর কিছু পরই দমকল বাহিনীর কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তাদের একজনকে চিনতেন ডেভিড। তাকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি চিৎকার করে সবাইকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫
আরএইচ