ত্রিপলী: অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এক বছর আগে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় লকারবি বোমা হামলার ঘটনার অপরাধী আব্দেল বাসেত আল-মেগরাহিকে (৫৮)। কিন্তু মুক্তির পর থেকে সাবেক এ গোয়েন্দা কর্মকর্তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখছে লিবিয়া।
১৯৮৮ সালে স্কটল্যান্ডের শহর লকারবির উপর প্যান এম এয়ারলাইন বিমানে বোমা হামলার অপরাধে মেগরাহিকে স্কটল্যান্ডে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। কিন্তু গত বছরের ২০ আগস্ট প্রসটেইট ক্যান্সারের কারণ দেখিয়ে আগেভাগেই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এসময় তার আর মাত্র তিন মাস আয়ু আছে বলেও চিকিৎসকরা জানান।
কিন্তু কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার পর বীরোচিত সংবর্ধনা পাওয়া মেগরাহি এক বছর পরও ভালভাবেই বেঁচে আছেন। যার তীব্র প্রতিবাদ করছে ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এ হামলার শিকার ২৭০ জনেরও মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন এ দু’দেশের নাগরিক।
এদিকে বরাবরই স্বাস্থ্যের বিষয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখা লিবিয়া গত ডিসেম্বরে শেষবারের মত মেগরাহির স্বাস্থ্যের অবস্থা প্রকাশ করে, যাতে তার শারীরিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে এবং এখনও ক্যামোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে বলে বলা হয়।
এরপর থেকে তার বিষয়ে এমনকি লিবিয়ার গণমাধ্যমও আর একটাও শব্দ উচ্চারণ করেনি। আর এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের যুক্তি হচ্ছে, ‘আমরা তাকে শান্তিতে থাকতে দিতে চাই। ’
তবে ত্রিপলীর দামাস জেলার স্থায়ীভাবে নিরাপত্তা কর্মী বেষ্টিত একটি ভিলাতে মেগরাহি তার পরিবারের সঙ্গে নিভৃত জীবনযাপন করছেন বলে তার কাছের এক আত্মীয় জানান। তার শারীরিক অবস্থা এখন ‘স্থিতিশীল’, শুধু এটুকু উল্লেখ করে বার্তাসংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘তিনি শুধু হাসপাতালে যেতে এবং তার মাকে দেখতে বাড়ি থেকে বের হন। ’
১৯৮০ সালে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ উঠার পর থেকে লিবিয়া আন্তর্জাতিকভাবে প্রায় একঘরে হয়ে পড়ে।
এদিকে মেগরাহির মুক্তির ব্যাপারে ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামের (বিপি) তদবির করার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বিশ্ব বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তা নতুন করে ক্ষোভের জন্ম দেয়। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে বিপি ও লিবিয়ার কর্তৃপ।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে তেল সমৃদ্ধ লিবিয়ার সঙ্গে বিপি ৯শ’ কোটি ডলারের চুক্তি সাক্ষর করে, যা এ প্রতিষ্ঠানের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় চুক্তি।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৩২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১০