মিয়ানমারের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে গত কয়েক সপ্তাহে নারী ও শিশুসহ প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। ম্যাক্রোঁ এই সংকট সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলেও জানান।
ম্যাক্রোঁ জানান, ‘আমরা জাতিগত শুদ্ধি ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে চাই। জাতিসংঘের অনুপস্থিতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের পথ তৈরি করতে পারে না। এর সমুচিত জবাব থাকা প্রয়োজন। জাতিসংঘ যখন নিন্দা জানায় তখন জাতিসংঘের অধীনে হস্তক্ষেপের জন্য একটি কাঠামো সরবরাহ করা যেতে পারে। আর এমন ফলাফল রয়েছে। সেখানে সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের নামে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এ রকম গণহত্যা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। ’
এই গণহত্যাকে পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা বলেও অনেকে উল্লেখ করছেন।
এর আগে মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনী নৃশংস অভিযানে সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভার পাশাপাশি অনুষ্ঠিত ম্যাক্রোঁর সঙ্গে এক বৈঠকে আলাপকালে ইউনূস এই আহ্বান জানান। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সরকারপ্রধানদের পরিবেশ সংক্রান্ত বৈঠকের পর এই সভায় ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে অংশ নেন ড. ইউনূস। তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন ও সহিংসতা বন্ধ করতে, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে এবং সম্প্রদায়টিকে পূর্ণ নাগরিকত্ব দিতে নাইপিদো সরকারের ওপর পূর্ণ চাপ প্রয়োগ করতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশের এই প্রেসিডেন্টের প্রতি অনুরোধ জানান।
মানবাধিকার সংগঠন ফোরাম ফর দি ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের উদ্যোগে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জণগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিয়ানমারে যে র্নিমম গণহত্যা চলছে তা বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন।
পুলিশের ওপর হামলার অজুহাতে মিয়ানমার সরকার সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের কথা বললেও জাতিসংঘ বলছে, গত ২৫ আগস্টের ওই ঘটনার পর থেকে সেখানে জাতিগত নিধন চলছে। এই নিধনযজ্ঞে হাজার হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন। প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসতে পারা রোহিঙ্গারা স্বদেশ ছেড়ে কেবল বাংলাদেশেই শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১০ ঘণ্টা, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭
এমআরপি