ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চলছে পাকিস্তানের ভোটগ্রহণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৮
কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চলছে পাকিস্তানের ভোটগ্রহণ ইসলামাবাদের একটি ভোটকেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের ১১তম সাধারণ নির্বাচনে ভোট দিতে জন্য লাখ লাখ নিবন্ধিত ভোটার ভিড় করছেন ভোটকেন্দ্রে। পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের চরসাদ্দায় প্রথম ভোটাগ্রহণ শুরু হয়। 

ভোটগ্রহণের দিন সহিংসতা এড়াতে গোটা পাকিস্তানের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ৩ লাখ ৭১ হাজার সেনাসদস্যসহ প্রায় ৮ লাখ নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।  

সব মিলিয়ে পাকিস্তানের মোট ৮ হাজার ৫০৮টি ভোট কেন্দ্রে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮৭টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে।

এরমধ্যে ২৩ হাজার ১০৪টি কেন্দ্রে পুরুষদের, ২১ হাজার ৩২২ কেন্দ্রে নারীদের এবং ৪০ হাজার ৬৩২ কেন্দ্রে নারী-পুরুষ উভয়ের ভোট নেওয়া হবে। প্রায় ১৭ হাজার কেন্দ্রে নিরাপত্তা হুমকি রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইলেকশন কমিশন অব পাকিস্তানের (ইসিপি) তথ্য অনুযায়ী, সবুজ ব্যালট পেপার প্রতিনিধিত্ব করবে জাতীয় পরিষদের প্রার্থীদের এবং সাদা ব্যালট পেপার প্রতিনিধিত্ব করবে প্রাদেশিক পরিষদ প্রার্থীদের।

ভোটারদের মূল নাগরিক পরিচয়পত্র ছাড়া ভোট দিতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ পরিচয়পত্র থাকলে ভোট দেওয়া যাবে।

একদিন আগে (মঙ্গলবার, ২৪ জুলাই) পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রিজাইডিং অফিসাররা ব্যালট বাক্স ও ভোটের অন্যান্য সামগ্রী দেশটির সবগুলো ভোটকেন্দ্রে বিতরণ করেন।  

এ নির্বাচনে অংশ নেবেন মোট ১১ হাজার ৬৭৩ জন প্রার্থী। এরমধ্যে জাতীয় পরিষদে ৩ হাজার ৪২৪ এবং প্রাদেশিক পরিষদে লড়বেন ৮ হাজার ২৪৫ প্রার্থী। দলীয়ভাবে ৫ হাজার ৬৬১ জন এবং স্বতন্ত্রভাবে ৬ হাজার ১২ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেবেন।
ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন ভোটাররা।  ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে পাঞ্জাবে ৮২০ জন, সিন্ধুতে ৪৪১ জন, কেপিতে ৩৩৫, বেলুচিস্তানে ১৭৩ এবং দেশটির রাজধানীতে ৩৬ জন প্রার্থী নির্বাচন করছেন। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পাঞ্জাবে ৭১৪ জন, সিন্ধুতে ৩৭৩ জন, কেপিতে ৩৮৬ জন, বেলুচিস্তানে ১১৭ জন ও রাজধানীতে ৩৩ জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন।

প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মোট ৮ হাজার ২৪৫ জন প্রার্থী নির্বাচন করছেন, যার মধ্যে বিভিন্ন দলের প্রার্থী রয়েছেন ৩ হাজার ৮৫৬ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ৪ হাজার ৩৮৯ জন। পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশে রাজনৈতিক দলের চেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। পাঞ্জাব প্রদেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ২ হাজার ২৫৬ জন, রাজনৈতিক দলের প্রার্থী রয়েছেন ১ হাজার ৭১৯ জন। অপরদিকে সিন্ধু প্রদেশে ১ হাজার ১৮৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ৯৯৩ জন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী নির্বাচন করছেন।    

দেশটির নির্বাচন কমিশনে অর্ন্তভুক্ত ১২০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৯৫টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। অংশ নেওয়া ৯৫টি দলের মধ্যে ৭টি রাজনৈতিক দল নারীদের জন্য ৫ শতাংশ সাধারণ আসনের শর্ত পূরণ করছেন।

দেশটির সাধারণ নির্বাচনে এবার প্রায় সাড়ে ১০ কোটির ভোটার নিবন্ধন করেছেন। যেখানে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৯২ লাখ ২২ হাজার ৯২৭ জন, অপরদিকে নারী ভোটারের সংখ্যা ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৩০ হাজার ৫৬৯ জন। এছাড়াও এ নির্বাচনে ১ হাজার ৯১৩ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। যেখানে শুধু পাঞ্জাব থেকেই ১ হাজার ৩৫৬ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার নিবন্ধন করেছেন।

বুধবার (২৫ জুলাই) শুরু হওয়া পাকিস্তানের এ জাতীয় নির্বাচনে ভোটাররা স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন। আগ্রহী ভোটারদের অনেকেই সকাল ৭টায় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়।
..
দেশটির ১১তম জাতীয় নির্বাচনে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ (পিটিআই), পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজ (পিএমএল-এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।

এর আগে পাকিন্তানের নির্বাচন কমিশন ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়াতে ২৫ জুলাইয়ে দেশটিতে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করে।  

পাকিস্তানের এ জাতীয় নির্বাচনে সহিংসতা ঠেকাতে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৮৮জন সেনা মোতায়েন করেছে নির্বাচন কমিশন।  

স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

নির্বাচন শেষ হলে শুরু হবে গণনা। বৃহস্পতিবার ভোর হওয়ার আগেই বেশিরভাগ আসনের বিজয়ীদের নাম জানা যাবে। নিশ্চিত হওয়া যাবে কারা আগামী ৫ বছর শাসন করবে পাকিস্তান।

বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৮
এএইচ/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।