ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে বিশ্ব আজ দুইভাগে বিভক্ত। সেই প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে।
দীর্ঘ প্রায় সাত দশক পর এমন মুদ্রাস্ফীতি মুখে সারা বিশ্ব। ষাটের দশকে এমন তীব্র মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছিল, বিশ্বজুড়ে বেড়েছিল জীবনযাপনের ব্যয়, লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছিলেন। সৃষ্টি হয়েছিল জ্বালানি সঙ্কট। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে বিশ্বের ছয়টি দেশের মানুষ রাস্তায় নেমেছিল।
দ্য ইকোনোমিস্ট পত্রিকার মতে, সেটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুদ্রাস্ফীতি। ১৯৬৫ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত দুই দশক চলেছিল সেই অবস্থা।
ভারতীয় গণমাধ্যম ডব্লিউআইওএন’র মতে ২০২২ সালেও বিশ্বে ফিরে আসছে তেমন সময়। বিশ্বজুড়ে তরতর করে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি, বাড়ছে জ্বালানির দাম, বিভিন্ন দেশে চাকরি হারাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। অর্থনৈতিক সঙ্কটের ফলে বাড়ছে জীবনযাপন ব্যয়। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নামছে মানুষ।
চলতি বছরের ১৬ জুন আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সের রাস্তায় মুদ্রাস্ফীতি, জীবনযাপনের ব্যয় বাড়ার প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেন। একই দিনে ইকুয়েডরের রাস্তায়ও বিক্ষোভ হয়েছে।
১৮ জুন লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লন্ডনের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে ব্রিটিশ ট্রেড ইউনিয়ন। দ্রব্যমূল্যের প্রতিবাদে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও বিক্ষোভ হয়েছে ১৯ তারিখ।
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসেও ৭০ হাজার মানুষ ২০ জুন জীবনযাপনের ব্যয় বাড়ার প্রতিবাদে বড় বিক্ষোভ করেছেন।
১৯৭০ সালের পর ২০২২ সালেই বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বড় মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৪৫টি দেশ তাদের মুদ্রার মূল্যমান কমিয়েছে। এছাড়াও বেশকিছু দেশ সুদের হার আরও বাড়িয়েছে।
এরইমধ্যে যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশে পৌঁছেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শঙ্কা আসন্ন শরতে সেই হার ১২ শতাংশ ছাড়াবে।
আর্জেন্টিনায় জীবনযাপন ব্যয় বেড়েছে ৭০ শতাংশ। এরকম চলতে থাকলে বছর শেষে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ৬০ শতাংশ ছুঁতে পারে। আর্জেন্টিনার ৪৩ শতাংশ মানুষ এখন দারিদ্র্য সীমায়, ২০ লাখ মানুষ খাবারের জন্য ফুড ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে ফুড ব্যাংকের খাবারও ফুরিয়ে গেছে। তাই মানুষ বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছে, প্রতিবাদ করছে।
বেলজিয়ামে জীবনযাপন ব্যয়ের সাথে মানিয়ে নিতে বেতন বাড়ানোর দাবিতে ৭০ হাজার শ্রমিক আন্দোলনে নামলে তাদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
ভারতেও বাড়ছে মু্দ্রাস্ফীতি। দেশটির মুদ্রাস্ফীতির হার এরইমধ্যে ৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে। সামনের মাসেই এটা ৮ শতাংশ ছাড়াতে পারে।
ভারতের হোলসেল মুদ্রাস্ফীতি ১৫.৮৮তে পৌঁছেছে। জ্বালানি খাতে সেই হার ৪০ শতাংশ। ডলারের বিপরীতে রুপির মানও কমছে তরতরিয়ে। বর্তমানে এক ডলার কিনতে খরচ হচ্ছে ৭৮ রুপি।
সূত্র: ডব্লিউআইওএন
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
নিউজ ডেস্ক