ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার নেতা উদ্ভব ঠাকরে। বুধবার (২৯ জুন) রাতে মুখ্যমন্ত্রীর ফেসবুক পেজে লাইভ বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই ঘোষণা দেন।
মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার আগে স্থানীয় সময় রাত ৯টায় সুপ্রিম কোর্ট আদেশ দেয়- বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) উদ্ভব ঠাকরেকে বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। আদালত এই প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না।
শাসক দলের বড় সংখ্যক বিধায়ক উদ্ভব ঠাকরের বিরোধিতা করায় রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে শক্তি পরীক্ষা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল শিবসেনাই। তবে সেখানে আদেশ তার বিরুদ্ধে যাওয়ার পরেই পদত্যাগ করলেন শিবসেনা প্রধান।
শিবসেনা কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল হওয়া সত্যেও কংগ্রেস আর জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি বা এন সি পির সঙ্গে জোট সরকার চালাচ্ছিল। শিবসেনারই এক নেতা একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে দলের কিছু বিধায়ক এ মাসের ২১ তারিখ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। প্রথমে কয়েকদিন গুজরাটে, তারপর আসামের গুয়াহাটিতে কাটিয়ে বুধবার রাতেই একটি ভাড়া করা বিমানে গোয়ায় পৌঁছেছেন একনাথ শিন্ডে ও তার সঙ্গী বিধায়করা। প্রথমে বিদ্রোহীদের সংখ্যা ছিল ১১ জন। তবে একনাথ শিন্ডের দাবি অনুযায়ী তার সঙ্গে ৫০ জন বিধায়ক রয়েছেন।
মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের কাছে একটি চিঠি দিয়ে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা দেভেন্দ্র ফাডনবীশ দাবি করেছেন, ৩৬ জন বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরেকে আর সমর্থন করছেন না। সেই চিঠির ভিত্তিতেই রাজ্যপাল বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষার নির্দেশ দেন।
বিদ্রোহী বিধায়ক ও তাদের নেতা একনাথ শিন্ডের বক্তব্য হচ্ছে, শিবসেনার স্বাভাবিক জোট সঙ্গী ছিল বিজেপি। দুটি দলের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনাও হিন্দুত্বকে কেন্দ্র করে। আবার তারা সর্বশেষ নির্বাচনেও লড়েছিল জোট বেঁধে। কিন্তু ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে একমত না হওয়ায় মতাদর্শগতভাবে সম্পূর্ণ বিরোধী মেরুতে থাকা কংগ্রেস আর জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির সঙ্গে জোট বাঁধেন উদ্ভব ঠাকরে। দলকে বিজেপির সঙ্গে ফের জোট বাঁধার দাবি করছিলেন একনাথ শিন্ডে। তার গোষ্ঠীকেই আসল শিবসেনা বলেও দাবি করেন তিনি। তবে মুখ্যমন্ত্রী ইস্তফা দেওয়ায় বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষা এখন আর হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, ৩০ জুন, ২০২২
এনএসআর