ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হলেন একনাথ শিন্ডে

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২২
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হলেন একনাথ শিন্ডে

ঢাকা: ভারতের মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শিবসেনার নেতা একনাথ শিন্ডে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যার পর রাজভবনে শপথ বাক্য পাঠ করেন তিনি।

একই সঙ্গে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফডনবিশ। খবর এনডিটিভির।

একনাথ শিন্ডে ও দেবেন্দ্র ফডনবিশকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগে, শিন্ডে ও দেবেন্দ্র মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির সঙ্গে দেখা করেন। ওই সাক্ষাতের পর দেবেন্দ্র ফডনবিশ প্রথম একনাথ শিন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথা জানান।

অটোরিকশা চালক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সফর: ১৯৬৪ সালে মহারাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেন শিন্ডে। তিনি সাতারা জেলার পাহাড়ি জাওয়ালি তালুকার বাসিন্দা এবং মারাঠি সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। একনাথ শিন্ডে থানেকে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন এবং তার পরে ওয়াগলে এস্টেট এলাকায় থেকে অটোরিকশা চালাতে শুরু করেন। একনাথ শিন্ডে আশির দশকে অটোরিকশা চালাতে গিয়ে শিবসেনায় যোগ দেন এবং দলের একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেন।

একনাথ শিন্ডে ১৯৯৭ সালে থানে মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এবং ২০০১ সালে মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন হাউসে বিরোধী দলের নেতা হন। এরপর ২০০২ সালে আবারও দ্বিতীয়বারের মতো করপোরেশনের কাউন্সিলর হন। এছাড়া তিন বছর ক্ষমতাসীন স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি দ্বিতীয়বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার দুই বছর পরেই বিধায়ক হয়েছিলেন, তবে শিবসেনার তার রাজনৈতিক উত্থান ২০০০ সালের পরে শুরু হয়।

থানের এলাকার শিবসেনার প্রবীণ নেতা আনন্দ দিঘে ২০০০ সালে মারা যান। এরপর একনাথ শিন্ডে উত্থান শুরু হয়। এদিকে, ২০০৫ সালে নারায়ণ রানে শিবসেনা ত্যাগ করেন, তারপরে দলে একনাথ শিন্ডের মর্যাদা বাড়তে থাকে। রাজ ঠাকরে শিবসেনা ছাড়ার পর শিবসেনায় একনাথ শিন্ডের গ্রাফ বেড়ে যায় এবং ঠাকরে পরিবারের ঘনিষ্ঠও হয়ে ওঠেন। একনাথ দৃঢ়ভাবে উদ্ধব ঠাকরের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

একনাথ শিন্ডে ২০০৪ সালে থানের কোপরি- পাঁচপাখাদি আসন থেকে প্রথমবারের মতো বিধায়ক নির্বাচিত হন। শিন্ডে, যিনি শিবসেনার টিকিটে ২০০৪ সালে প্রথমবার বিধানসভায় পৌঁছেছিলেন, পরে ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালেও বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। শুধু তাই নয়, একনাথ শিন্ডের ছেলে শ্রীকান্ত শিন্ডেও শিবসেনার টিকিটে কল্যাণ লোকসভা আসন থেকে সাংসদ। এভাবেই পুরসভার কাউন্সিলর থেকে বিধায়ক ও মন্ত্রী হয়ে যান একনাথ শিন্ডে।

২০১৯ সালে বিধায়ক দলের নেতা নির্বাচিত হন দেবেন্দ্র ফড়নবিস মন্ত্রিসভার শক্তিশালী মন্ত্রীদের মধ্যে একনাথ শিন্ডে ছিলেন। ২০১৯ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে যখন তিনি চতুর্থবারের মতো বিধানসভায় পৌঁছেছিলেন, তখন শিবসেনা এবং তার জোটের শরিক বিজেপির মধ্যে আলোচনার অবনতি ঘটে। শিবসেনা বিধায়ক দলের বৈঠকে একনাথ শিন্ডেকে বিধানসভা দলের নেতা নির্বাচিত করা হয়। এরপর আদিত্য ঠাকরেকে নেতা নির্বাচিত করা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। শিবসেনা আইনসভা দলের বৈঠকে, আদিত্য ঠাকরেই একনাথ শিন্ডের নাম প্রস্তাব করেছিলেন এবং তিনি বিধায়ক দলের নেতা নির্বাচিত হন।

এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে শিন্ডের নাম ছিল ২০১৯ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময়, উদ্ধব ঠাকরে একটি সাক্ষাতকারে বলেছিলেন যে মহারাষ্ট্রে কেবল একজন শিব সৈনিক মুখ্যমন্ত্রী হবেন। উদ্ধব বলেছিলেন যে আমি বালাসাহেব ঠাকরেকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। এমতাবস্থায়, যখন মহা বিকাশ আঘাড়ির সরকার গঠিত হচ্ছিল, তখন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে একনাথ শিন্ডের নাম দ্রুত উঠে আসে। সেই সময় শিবসেনার বিধায়ক ও নেতারাও তার নামে প্রস্তুত ছিলেন, কিন্তু এনসিপি এবং কংগ্রেস এতে একমত হয়নি। মহা বিকাশ আঘাড়ির থেকে উদ্ধব ঠাকরের নাম সামনে আসার পর একনাথ শিন্ডের আকাঙ্ক্ষা ভেস্তে যায়। তবে, তার আগেই একনাথ শিন্ডের সমর্থকরা তাকে ভবিষ্যৎ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বর্ণনা করে জায়গায় জায়গায় পোস্টার লাগাতে শুরু করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৩ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২২
জিসিজি/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।