দীর্ঘ ৫০ বছর পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন কিম ফুক ফান টি। ১৯৭২ সালে বোমার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন তিনি।
দীর্ঘ চিকিৎসার পর তিনি এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। পিঠের ত্বক পরিণত হয়ে উঠেছে তার। খবর ডেইলি মেইল।
ঘটনার পেছনে গেলে জানা যায়, ১৯৭২ সালে ভিয়েতনামে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমান থেকে একাধারে ফেলা হচ্ছিল নাপাম বোমা। কিমের গ্রাম তখন ধ্বংস হয়ে যায়। এ অবস্থায় আরও কয়েকজন কিশোর-কিশোরীর সঙ্গে দৌড়ে পালাচ্ছিল ৯ বছর বয়সী কিম। পেছনে কয়েকজন সেনা। একটি ছবিতে দেখা যায় মেয়েটি সেনা সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছে। খোলা পিঠের অধিকাংশে ক্ষত। তারপরও দৃঢ় প্রচেষ্টায় সে যাত্রায় বেঁচে ফিরেছিলেন কিম ফুক ফান টি বা নাপাম গার্ল।
অবাক করা বিষয় হলো যে যুক্তরাষ্ট্রের বোমার আঘাতে আহত হয়েছিলেন কিম, সেই যুক্তরাষ্ট্রেই তার পিঠের ত্বকের চিকিৎসা হয়েছে।
কিমের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার সাক্ষী নিক। নিজের চোখে দেখা ঘটনা তিনি বন্দি করেছিলেন ক্যামেরায়। ছবি প্রকাশ হতেই সারা বিশ্বে তোলপাড় লেগে যায়। পরবর্তীতে সেই ছবির জন্যই পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন নিক।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ঘেঁটে দেখা যায়, ১৯৯২ সালে স্বামীর সঙ্গে ভিয়েতনাম ছাড়েন কিম আশ্রয় নেন কানাডায়। সেই সময়ই আমেরিকার মিয়ামিতে তার সঙ্গে যোগাযোগ হয় ত্বক বিশেষজ্ঞ জিল জোয়াবেলের। কিম ফুকের কাছে গোটা ঘটনা শুনে লজ্জায় পড়ে যান তিনি। পরবর্তীতে পুরো চিকিৎসাই তিনি করেন বিনা পয়সায়।
ত্বকের ক্ষত সারিয়ে কিম স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পর তিনি জানান, আর কেউ এমন ঘটনার শিকার হোক তিনি চান না। কিম বলেন, ৫০ বছর পর এখন আমি মুক্ত। আমাকে আর যুদ্ধের ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াতে হবে না। আর নাপাম গার্ল নামে আমাকে কেউ ডাকবে না। আমি একজন বন্ধু, একজন বোন, যে যুদ্ধের ক্ষত মুছে বিশ্বশান্তির আহ্বান জানাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, ০১ জুলাই, ২০২২
এমজে