ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দেশি-বিদেশি অস্ত্রের ভাণ্ডার রয়েছে নতুন জঙ্গি সংগঠনের 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৩
দেশি-বিদেশি অস্ত্রের ভাণ্ডার রয়েছে নতুন জঙ্গি সংগঠনের  ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র কাছে দেশি-বিদেশি অস্ত্রের ভাণ্ডার রয়েছে৷ এসব অস্ত্র চক্রটি তাদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করে আসছিলো।

এসব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চক্রটির অস্ত্র সরবরাহকারীসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

 

রোববার (৮ জানুয়ারি) বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও রাজধানীর কদমতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতার আসামিরা হলেন অস্ত্র সরবরাহকারী কবীর আহাম্মদ (৫০), শামীম মাহফুজের সহযোগী ইয়াসিন (৪০) ও আব্দুর রহমান ইমরান। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ৩টি দেশিয় অস্ত্র, ৬টি একনলা বন্দুক, ১১ রাউন্ড গুলি, সিসা, এসিড, গান পাউডার, অকটেনসহ বিভিন্ন ধরনের দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (০৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টুরোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, গত ২১ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্রগ্রামের দূর্গম পাহাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার সাইফুল ইসলাম তুহিন ও নাঈম হোসেনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই সংগঠনে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কবির আহাম্মদকে শনাক্ত করে সিটিটিসি।  

পরে সিটিটিসি কবীর আহাম্মদকে বান্দরবান জেলা থেকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যাংছড়ি বাইশারী এলাকার দূর্গম পাহাড়ী অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে মাটির নিচে লুকায়িত অবস্থায় দুটি প্লাস্টিকের ড্রাম থেকে অস্ত্র ও গোলাবারূদ জব্দ করা হয়। এছাড়া তার দুই সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।  

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার কবীর জানান, তিনি জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’কে অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন এবং জব্দ অস্ত্রের কিছু অংশ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কাছ সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। প্রাথমিকভাবে তার বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় অস্ত্র মামলার তথ্য পাওয়া গিয়েছে।

গ্রেফতার আসামিরা আরও জানায়, জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র মাস্টার মাইন্ড পলাতক আসামি শামিন মাহফুজ দূর্গম পার্বত্য এলাকায় ওই সংগঠনের সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন ধাপে অস্ত্র সংগ্রহের জন্য কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে গ্রেফতার কবীর আহাম্মদের কাছ থেকে তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরীর কদমতলী থানা এলাকা থেকে তার দুই সক্রিয় সদস্য ইয়াসিন ও আব্দুর রহমান ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, ইয়াসিন ও আব্দুর রহমান ইমরান জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সক্রিয় সদস্য। তারা উভয়েই পলাতক আসামি শামিন মাহফুজের ঘনিষ্ট সহযোগী। গ্রেফতার আব্দুর রহমান ইমরানের মাধ্যমে শামিন মাহফুজ বিভিন্ন সময় তার সাংগঠনিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করতেন। এছাড়া গ্রেফতার ইয়াসিন বিভিন্ন সময় শামিন মাহফুজের জন্য সেল্টার হাউজ ব্যবস্থাপনাসহ সংগঠনের উগ্রবাদী আদর্শে দীক্ষিত হয়ে কথিত হিজরতে গমনকারীদের জন্য ব্যবহৃত সেল্টার হাউজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কবীর আহাম্মদ আগে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করলেও এখন তিনিও জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া সক্রিয় সদস্য। তিনি অস্ত্র সরবরাহের জন্য এই জঙ্গি সংগঠনের কাছ থেকে টাকাও নিতেন।  

এই সংগঠনে এখন পর্যন্ত কতজন সদস্য আছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখনো কথিত হিজরতকারীদের নিয়ে কাজ করছি। এছাড়া এই সংগঠনের কত সদস্য আছে তা বলা যাচ্ছে না।

গ্রেফতার বিরুদ্ধে রাজধানীর ডেমরা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছে। তাদেরকে আজকে আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করা হবে। রিমান্ডে এনে এবিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৩
এসজেএ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।