ঢাকা: ১১ আগস্ট ২০০৯ সাল, রূপগঞ্জ উপজেলার গঙ্গানগর গ্রামে আব্দুর রহমান ও তার স্ত্রী খাদিজা বেগমের মধ্যে দেখা দেয় পারিবারিক বিরোধ। স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আব্দুর রহমান।
ওই ভাড়াটে খুনিরা খাদিজাকে নির্জন স্থানে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। এরপর তাকে হত্যা করে। চুক্তি অনুযায়ী আব্দুর রহমানের কাছে তারা ১০ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। ফলে তিনি নিজেও ওই খুনিদের হাতে নিহত হন। পরে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ বোচার বাগ গ্রামের জয়নাল ফকিরের পরিত্যক্ত ডোবার কচুরি পানার নিচে গুম করে রাখে হত্যাকারীরা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী খাদিজার বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে লোকমান (৩৫) নামে এক স্থানীয়সহ ছয়জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
পরে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১২ সালের ৬ জুন পলাতক আসামিদের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের গ্রেফতারি পরোয়ানাও ইস্যু করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার নামীয় ও মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি লোকমানকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-২)। বিকেলে র্যাব-২ অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন খান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জের নবাবগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি লোকমানকে আটক করা হয়। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
লোকমান জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে নবাবগঞ্জের আগলা এলাকায় ছদ্মবেশ ও নিজের নাম পরিবর্তন করে বসবাস করতেন। তিনি কখনো দিনমজুর, গাড়ির হেলপার ও পিকআপ ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। লোকমান সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, আসামি লোকমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট থানায় তাকে হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
এসজেএ/এমজে