ঢাকা: আগামী দুই বছরের জন্য থাইল্যান্ডে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবে বাংলাদেশ। সে কারণে এবারের বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব এম জসীম উদ্দিন।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন ও থাইল্যান্ড সফর সামনে রেখে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব এম জসীম উদ্দিন জানান, আগামী ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা আগামী ৩ এপ্রিল ব্যাংককে পৌঁছাবেন।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, আগামী ২ এপ্রিল ব্যংককে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রসমূহের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ২৫তম সভায় আমি অংশ নেবো। এ ছাড়া পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আগামী ৩ এপ্রিল ব্যাংককে অনুষ্ঠেয় ২০তম বিমসটেকের মন্ত্রিপর্যায়ের সভায় অংশ নেবেন। প্রধান উপদেষ্টা শীর্ষ সম্মেলন শেষে আগামী ৪ এপ্রিল বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হবেন।
এবারের বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের আগে আগামী ৩ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা বিমসটেক ইয়ং জেনারেশন ফোরাম: হোয়ার দ্য ফিউচার মিটস শীর্ষক ফোরামে কি-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য দেবেন।
আসন্ন বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রসমূহের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা বিমসটেক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে মতবিনিময় করবেন এবং বিমসটেক অঞ্চলের জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নসহ এই অঞ্চলকে আর্থ-সামাজিকভাবে আরও উন্নত, টেকসই ও শান্তিপূর্ণ হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেবেন।
বিমসটেকের আওতায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিমসটেকমুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, যোগাযোগ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, জ্বালানি সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা ও মানব নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি, সংস্কৃতি, পর্যটনের বিকাশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিমারি মোকাবিলায় প্রস্তুতি প্রভৃতি বিষয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার অগ্রগতি পর্যালোচনাপূর্বক শীর্ষ সম্মেলনে রাষ্ট্র/সরকার প্রধানরা সর্বসম্মতিক্রমে যৌথ ঘোষণা জারি করবেন।
জসীম উদ্দিন বলেন, বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেকের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যকার ‘মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট কো-অপরেশন’ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এ চুক্তি বাণিজ্যিক শিপিং এবং সামুদ্রিক পরিবহন শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কের বাড়াতে সহায়তা করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, এবারের ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন নতুন বাংলাদেশের জন্য বিমসটেকের মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক অঙ্গনে নতুন পদচারণা। এবারের সম্মেলন আমাদের জন্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটি ন্যায়ভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে উপস্থাপনের সুযোগ এনে দেবে।
আমি বিশ্বাস করি, এবারের সম্মেলন বাংলাদেশ এবং অন্যান্য বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় এবং গভীর করবে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আব্দুল মোতালেব সরকার, মোহাম্মদ নূরে আলম ও মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২৬ মার্চ চীন সফরে যাচ্ছেন। এটাই হবে প্রধান উপদেষ্টার প্রথম কোনো দেশে দ্বিপক্ষীয় সফর। চীন থেকে ফিরে আসার পর আগামী ৩ এপ্রিল বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি থাইল্যান্ড যাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৫
টিআর/এএটি