ভারতে মোদী সরকার মুসলমানবিরোধী আরও একটি পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
রোববার (৬ এপ্রিল) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভ্যারিফায়েড পেজে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মসজিদসহ মুসলমানদের ঐতিহাসিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে শঙ্কা প্রকশা করে আসিফ নজরুল বলেন, নতুন আইন পাস করে তারা (ভারত সরকার) মুসলমানদের ‘ওয়াক্ফ’ সম্পত্তি পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিমদেরও রাখার এবং এসব সম্পত্তিতে সরকারের সরাসরি খবরদারিত্বের বিধান করেছে। এই আইন ব্যবহার করে পুরোনো মসজিদসহ মুসলমানদের বহু ঐতিহাসিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভারতে হিন্দু মন্দির পরিচালনা কমিটিতে অন্য ধর্মাবলম্বীরা স্থান পান না। এই প্রশ্ন সেখানে উঠেছে যে, ওয়াক্ফ বোর্ডে তাহলে অমুসলিমদের রাখা হবে কেন?’ এই আইন ভারতে মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষের বিরুদ্ধে ভারতের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর ক্রমাগত বৈষম্য ও নিপীড়নের আরেকটি অধ্যায় রচনা করবে।
সবশেষে আইন উপদেষ্টা বলেন, পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এরাই আবার বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের ভুয়া অভিযোগ তুলে যাচ্ছে অব্যাহতভাবে।
প্রসঙ্গত, ওয়াকফ সংশোধনী বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ওয়াকফ ঘোষণার আগে তার সম্পত্তি থেকে উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য অংশ নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত নারী ও অনাথদের জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আয় যদি এক লাখ টাকার বেশি হয়, তবে সেটির নিরীক্ষা করাতে হবে এবং রাজ্যের নিরীক্ষকরা এটি তদারকি করবেন। এর পাশাপাশি, কোনো সরকারি জমিকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে দাবি করা হলে, তার তদন্ত করবেন জেলা কালেক্টরের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা।
ভারতের বিরোধী দল ও মুসলিম সংগঠনগুলো এই আইনের তীব্র বিরোধিতা করছেন। তারা বলছেন, ৭০ বছরের পুরোনো ওয়াকফ আইনের নতুন সংশোধনীর ফলে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা অনেকটাই খর্ব হয়ে যাবে, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের বিষয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে মুসলমান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সম্পত্তির ওপর সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার একটি কৌশল বলে অভিযোগ তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৫
এসএএইচ