ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে বাটার লুণ্ঠিত জুতা বিক্রিতে ফেসবুকে পোস্টকারী মামুনুল আটক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৫
সিলেটে বাটার লুণ্ঠিত জুতা বিক্রিতে ফেসবুকে পোস্টকারী মামুনুল আটক

সিলেট: সিলেটে বাটার শো-রুমে হামলার পর লুণ্ঠিত জুতা ফেসবুকে পোস্ট করে বিক্রির চেষ্টাকারী মামুনুল হককে আটক করেছে পুলিশ।  

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে নগরের শিবগঞ্জের সাদিপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করে এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।

 

আটক মামুনুল সাদিপুর এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে।  

ভোররাত ৪টার দিকে এসএমপির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, এ নিয়ে লুটপাটে জড়িত ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে মামুনুল লুণ্ঠিত ৬ জোড়া জুতার ছবি সিলেটের পুরাতন ফার্নিচার ক্রয়-বিক্রয় ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন এবং নগরের উপশহরের যোগাযোগের ঠিকানা ও একটি মোবাইল নম্বর দেন। এই সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ভোররাতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৬ জোড়া জোতা উদ্ধার করা হয়।  

তিনি আরও বলেন, এর আগে সোমবার (৭ এপ্রিল) রাত ১২টা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ভাঙচুর-লুটপাটে জড়িত আরও ৩ যুবককে আটক করা হয়েছে।  

আটকরা হলেন- সুনামগঞ্জের দিরাই থানার রাজা মিয়ার ছেলে মো. রাজন (২০), সুনামগঞ্জ সদর থানার হাছানগর গ্রামের আরব আলীর ছেলে ইমন (১৯), নগরীর কোতোয়ালি থানার কাজিটুলা এলাকার দ্বীন ইসলামের ছেলে মো. রাকিব (১৯)।

উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে দিনভর উত্তাল ছিল সিলেট। তৌহিদী জনতার মিছিল থেকে কেএফসি, বাটা জুতার শো-রুমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠেছে বিভিন্ন মহলে। দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।  

তাৎক্ষণিক পুলিশ কোনো পদক্ষেপ না নিলেও সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সংগৃহীত ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযানে চালিয়ে ভাঙচুর-লুটপাটে জড়িত ৩ জনকে আটক করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।  

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার সিলেটে তৌহিদী জনতার ব্যানারে দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। তাৎক্ষণিক পুলিশ উৎসুক জনতার ভিড় থেকে কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে পরে সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িতদের আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটক করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।  

সরেজমিনে দেখা গেছে, তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল থেকে নগরের মীরবক্সটুলা কেএফসিতে ভাঙচুর, লুটপাট করা হয়। এ সময় কেএফসির মালামাল বাইরে এনে চুরমার করা হয় এবং কেএফসি ও রয়েল মার্কস হোটেলের ক্যাশ থেকে নগদ টাকা লুটের অভিযোগ ওঠে।  

তৌহিদী জনতা ইসরায়েলি পণ্য কোকাকোলো, স্প্রাইটসহ কোমল পানীয় রাস্তায় ফেলে ধ্বংস করেন। ভাঙচুর করা হয় নবনির্মিত রয়েল মার্কস হোটেলও।  ভবনের গ্লাসগুলো ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি কেএফসির আসবাবপত্র, ইলেক্ট্রিক সামগ্রী টিভি, ফ্রিজ, ওভেনসহ সবকিছু রাস্তায় বের করে ভাঙচুর করা হয়েছে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও এক পাশে নীরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। এ ছাড়া বাটার সবকটি শো-রুমেও ভাঙচুর, লুটপাট করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। তবে শপিংমল ইউনিমার্টে ভাঙচুরকালে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা চলে যায়। এ সময় ইউনিমার্টের সামনে সেনা সদস্যদের নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২৫
এনইউ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।