জুলাই অভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে কেরানীগঞ্জের বিশেষ কারাগারে একটি কক্ষে সম্পূর্ণভাবে আলাদা রাখা হয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) রাতে কেরানীগঞ্জ বিশেষ কারাগার থেকে একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সূত্রটি জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলায় ‘রাজসাক্ষী’ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিশেষ কারাগারের একটি রুমে সম্পূর্ণভাবে আলাদা রাখা হয়। সেই রুমেই আলাদাভাবে তাকে খাবারও দেওয়া হচ্ছে। রুমের সামনে কারারক্ষীরা পাহারায় আছেন।
এদিকে, রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি মামুনকে ক্ষমার বিষয়টি বিবেচনার কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে এর জন্য জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে নিজের এবং প্রধান ও সহযোগী অভিযুক্তদের অপরাধের সত্য তথ্য প্রকাশ করতে হবে তাকে।
শনিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এ সংক্রান্ত লিখিত আদেশ প্রকাশ করা হয়। ট্রাইব্যুনালের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, আব্দুল্লাহ আল মামুনকে সুবিধাজনক সময়ে বিচারের সাক্ষী হিসেবে ডাকা হবে। আদেশে তাকে কারাগারে আলাদা সেলে রাখা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশনাও দেওয়া হয়।
গত ১০ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এ মামলায় হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। আসামি হাসিনা ও কামাল পলাতক
আদেশের সময় ট্রাইব্যুনাল সাবেক আইজিপিকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি অভিযোগ স্বীকার করছেন কিনা? এরপরই মামুন নিজের অভিযোগ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন। পরে আদালত মামুনের আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
আদালতে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা সংঘটনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য। এ ঘটনায় আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। আমি রাজসাক্ষী হয়ে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই।
এজেডএস/এমজে