মা সাহেদা আক্তার আঁখি গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। স্কুল ছুটি হতেই ছোট্ট নূর জাহাদ বিন সাবাদ দৌড়ে যায় মায়ের কাছে।
১টা ৬ মিনিটে রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিমানটি স্কুল ভবনের ওপর এসে বিধ্বস্ত হয়। বেলা ১টা ১৮ মিনিটে এই খবর পায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার মিনিট তিনেক আগেও সেই ক্লাসরুমেই ছিল জাহাদ, বই গোছাচ্ছিল। আফরিন নামে তার এক বান্ধবী তখনো ক্লাসে, কোচিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। একটু দেরি করেছিল তার ভাই, তাই বের হয়নি। সে আর ফেরেনি।
রোববার (২৭ জুলাই) বাবা মো. বিলু মিয়ার হাত ধরে স্কুলে আসে জাহাদ। দুর্ঘটনার পর এই প্রথম তার স্কুলে আসা। জানালা ধরে চেয়ে থাকে পোড়া ভবনের দিকে। ফাঁকা বেঞ্চ, ছেড়া বই আর পুড়ে যাওয়া দেয়াল।
জাহাদ বলছিল, আফরিন সঙ্গে বের হতে চেয়েছিল। কিন্তু পারেনি। পরে শোনা যায় ওকে তো চেনাই যায়নি, ডিএনএ টেস্ট করে চিনেছে।
জাহাদের বাবা বলেন, ঘটনার পর থেকেই জাহাদ বদলে গেছে। সারাক্ষণ কান্না করে, স্কুলে আসতে চায়। অনেক বুঝিয়ে রেখেছি। আজ আর রাখতে পারলাম না।
এদিকে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া আহত ও নিহতদের পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ১৭ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৪ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন মারা গেছেন।
এ ছাড়া লুবানা জেনারেল হাসপাতাল এন্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে অজ্ঞাত একজন, ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেডে একজন মারা গেছেন। এ ছাড়া এসব হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৪৮ জন।
জেডএ/আরএইচ