ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩২, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রতিযোগিতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:১৫, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫
প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রতিযোগিতা প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমান।

ঢাকা: প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা (ইউনিডো), বাংলাদেশ এর উদ্যোগে শুরু হচ্ছে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচিত উদ্যোক্তাদের পুরস্কার দেওয়া হবে মোট ৫৪ লাখ টাকা।

 

বৃহস্পতিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁও পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশনের সম্মেলন কক্ষে এসএমই ফাউন্ডেশন ও ইউনিডো, বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে এবং নরওয়ে দূতাবাসের সহায়তায় ‘প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রতিযোগিতা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমান।  

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সৈয়দ শাহজাহান আহমেদ এবং জাতীয় প্রকল্প পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইউনিডো, বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. জাকিউজ্জামান এবং বিশেষজ্ঞ মো. মাহবুল ইসলাম।

স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজিম হাসান সাত্তার। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা খান, মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং মো. আব্দুস সালাম সরদার।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে সারা দেশ থেকে আবেদনকারী উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে নারী, শিক্ষার্থী, গবেষক, বেসরকারি সংস্থা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতের উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দিয়ে ২৫ জনকে নির্বাচিত করে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। নির্বাচিত ২৫ জন উদ্যোক্তা মেন্টরশিপ প্রশিক্ষণ শেষে ইউনিডো, বাংলাদেশ, অর্থ, পরিকল্পনা, শিল্প, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত জুরি বোর্ডের কাছে তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা উপস্থাপন শেষে সাতজন উদ্যোক্তাকে দুই লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে। এরপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ শেষে তাদের মধ্য থেকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত পাঁচজন উদ্যোক্তাকে তিন লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে।

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লিংক: https://www.plasticpath.org/page/cleantech-accelerator.html

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাবে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিশ্বব্যাংকের ২০২০ সালের প্রতিবেদন বলছে, দেশে বছরে নয় লাখ ৭৭ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে পুনর্ব্যবহার হয় শতকরা মাত্র ৩১ শতাংশ। শুধু ঢাকায়ই প্রতিদিন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয় সারা দেশের শতকরা ১০ শতাংশ বা ৬৪৬ টন।

তিনি বলেন, পুনর্ব্যবহার হয় শতকরা মাত্র ৩৭ শতাংশ। সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে প্লাস্টিকের ব্যবহার অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এ উদ্যোগের ফলে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার লক্ষ্য নয় (শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো) এবং ১২ (দায়িত্বশীল ভোগ ও উৎপাদন) বাস্তবায়ন সহজতর হবে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন অনুঘটকের ভূমিকা রাখছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এসএমই ফাউন্ডেশন এসএমই খাতের উন্নয়নে পলিসি অ্যাডভোকেসি, উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি উন্নয়ন ও লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহার, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন, ক্রেডিট হোলসেলিং, পণ্য বাজারজাতকরণ, পণ্য বিপণনে পরামর্শ ও সহায়তা, ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে এসএমই উদ্যোক্তাদের তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ, বিজনেস সাপোর্ট সার্ভিস, নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে কর্মসূচি পরিচালনা করছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ৩০ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, দেশের প্রায় এক কোটি ১৮ লাখ শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৯-এর বেশি কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই)। শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫ সিএমএসএমই খাতে। এ খাতে প্রায় তিন কোটিরও বেশি জনবল কর্মরত আছে।

অধিক জনসংখ্যা এবং সীমিত সম্পদের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ এসএমই নীতিমালা ২০১৯ এবং এসডিজি ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, যাদের ৬০-ই নারী-উদ্যোক্তা।

জিসিজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।