স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও দেশের মানুষ এখনো প্রত্যাশিত স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজের সুফল পায়নি বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি’ (এইচআরএসএস)।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এলেও মানবাধিকার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়নি। গুম বা ক্রসফায়ারের মতো ঘটনা না ঘটলেও, রাজনৈতিক সহিংসতা, নারী ও শিশু নির্যাতন, মব লিঞ্চিং, সংখ্যালঘু ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।
এই সময়ে কমপক্ষে ৬৯২টি রাজনৈতিক সহিংসতায় ১০৭ জন নিহত ও ৫ হাজার ৫৭৯ জন আহত হন। এর মধ্যে বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষেই ঘটে ৫৮৭টি ঘটনা। সাংবাদিকদের ওপর ২৩৬টি হামলার ঘটনায় ২ জন নিহত এবং ২০৯ জন আহত হন। একই সময়ে মব লিঞ্চিংয়ের ২৩৯টি ঘটনায় অন্তত ১৩০ জন নিহত হয়েছেন।
নারী ও শিশু নির্যাতনের চিত্রও ভয়াবহ। ৬৬৩ জন নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হন, যাদের মধ্যে ৫৯ শতাংশই শিশু। ধর্ষণের পর ১৯ জনকে হত্যা করা হয়। এছাড়া পারিবারিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ২৭৪ জন নারী এবং আত্মহত্যা করেছেন ১৩২ জন। শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১,০৬৫ জন, নিহত ২০৯।
সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২৩ জন বাংলাদেশি নিহত এবং ৩২৬৪ জনকে পুশইন করা হয়েছে। আরাকান আর্মির হামলায়ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত নয় মাসে কারাগারে মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাও কম নয়— অন্তত ২২টি ঘটনায় ৫ জন আহত, ৫টি মন্দির ও ৩৭টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে।
সংস্থাটি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে, ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষায় রাষ্ট্র, সরকার, রাজনীতি ও নাগরিক সমাজের সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। ’
এইচআরএসএস সরকারের পাশাপাশি সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক ও নাগরিকদের মানবাধিকার সুরক্ষায় আরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এজেডএস/এসআইএস