ঢাকা: ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে নেয়া কর্মসূচিতে ঢাকায় ব্যাপক জনসমাগমের মাধ্যমে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর এই শোডাউনের মধ্যে দিয়ে দলের সাংগঠনিক শক্তি এবং গণজমায়েতের ক্ষমতা প্রদর্শন করা হবে বলে জানা গেছে।
বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি বিশেষ করে দেশব্যাপী লাগাতার অবরোধের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বড় ধরনের শোডাউন জরুরি বলে মনে করছেন দলের নেতারা।
আগামী ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে জনসভার কর্মসূচির পাশাপাশি ঢাকায় শোডাউনের প্রস্তুতি নেয়া হবে। এই জনসভায় গণজমায়েতের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে বলেও আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন।
গত ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে মিছিল সমাবেশের প্রস্তুতি নেয় আওয়ামী লীগ। একই কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপিও।
প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে মিছিল সমাবেশ করতে না পারলেও ওই দিন ঢাকার রাজপথ ছিলো আওয়ামী লীগের দখলে। সারা ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে দলের হাজার হাজার কর্মী অবস্থান নেয়।
প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ কর্মীরা মাঠে থাকায় বিএনপি ও ২০ দলের নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে পারেনি। ফলে আওয়ামী লীগ কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা ও সাহস সঞ্চার হয়েছে বলে দলের নেতারা জানান।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা যায়, বিএনপি যে দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছে, তাতে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ। মধ্যবর্তী নির্বাচন বা বাতিল হওয়া নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পদ্ধতিতে আর ফিরে যাবে না ক্ষমতাসীন এ দলটি, তাই এ দাবিতে যেকোনো আন্দোলনকে কঠোরভাবে প্রতিহত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিরোধের উপরও জোর দিচ্ছে দলটি।
বড় ধরনের শোডাউন দিলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মনোবল ও সাহস বৃদ্ধির পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও তাদের চাপের মধ্যে রাখা যাবে। তবে শুধু ১০ জানুয়ারির কর্মসূচি নয়, জানুয়ারি থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়ে কর্মীদের মাঠে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
তারা জানান, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি পালনে মাঠে নামতে পারেনি বিএনপি নেতৃতাধীন জোট। বিশেষ করে রাজধানীতে তাদের কোনো রাজনৈতিক তৎপরতা দেখা যায়নি। চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে যানবাহন ভাঙচুর, আগুন দেওয়ার কিছু ঘটনার মধ্যে বিএনপির কর্মসূচি সীমাবদ্ধ ছিলো।
এ ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা আরও জানান।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সভাকে সফল করতে ইতোমধ্যেই ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ঢাকার সংসদ সদস্যদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। প্রত্যেক সংগঠনকে সর্বোচ্চ জমায়েত নিয়ে জনসভায় আসার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিকেলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার স্থল ও মঞ্চ নির্মাণ কাজ দেখতে গিয়ে বলেন, এই জনসভায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটনানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘন্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৫